ছুটির দিনে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে পদ্মা সেতু দেখতে দর্শনার্থীর ভিড় দেখা গেছে। তরুণ-তরুণীসহ সব বয়সী লোকজন সেতু দেখতে এসেছেন। কেউ এসেছেন গাড়ি নিয়ে, কেউ ভ্যান, অটোরিকশায়, কেউ বা বাইকে। অনেকেই আবার পায়ে হেঁটে জাজিরা প্রান্তে এসেছেন স্বপ্নের সেতু দেখতে। উৎসুক এসব মানুষ পদ্মা সেতুর সঙ্গে ছবি ও সেলফি তুলে স্মৃতির পাতায় ধরে রাখছেন।
শুক্রবার (১ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টায় পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের টোল প্লাজা সংলগ্ন ও আশেপাশে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু গত ২৫ জুন উদ্বোধন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সেতুর উদ্বোধন করেন। ২৬ জুন যানবাহনের জন্য সেতু খুলে দেয়া হয়। তারপর থেকেই সেতু দেখতে আসেন বিভিন্ন জেলার মানুষ। অন্যান্য দিনের চেয়ে আজ শুক্রবার ছুটির দিন বিকেলে মানুষের ভিড় বেশি দেখা যাচ্ছে।
খাগড়াছড়ি থেকে আসা অংথুইপ্রু বলেন, আমি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। আজ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পদ্মা সেতু দেখতে এসেছি। স্বপ্নের পদ্মা সেতু দেখে আমাদের খুবই ভালো লাগছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই।
পদ্মা সেতু দেখতে আসা মিলন বলেন, ছুটির দিন আমি পরিবার নিয়ে শিবচর থেকে এসেছি পদ্মা সেতু দেখতে। আমার স্বপ্ন ছিল, স্বপ্ন পূরণ হলো। বলে বোঝানো যাবে না কতটা ভালো লাগছে আমাদের।
দর্শনার্থী মাদারীপুরের তানহা ইসলাম, যশোরের ইমরান, ঢাকার ফাহাদ, আলমগীর হোসেন বলেন, অনেকদিনের ইচ্ছা আজ পূরণ হলো। ছুটির দিন তাই আমরা পদ্মা সেতু দেখতে এলাম। সেতুটি কাছ থেকে দেখে মন জুড়িয়ে গেল।
শরীয়তপুরের বাসিন্দা সালাউদ্দিন মুন্না বলেন, বাড়ির কাছে সেতু। তাই দেখতে আসলাম। জাজিরা প্রান্তে মোটরসাইকেল নিয়ে এসেছি। সেতুতে উঠতে দেবে না তাই মোটরসাইকেল রেখে বাস ভাড়া দিয়ে সেতুর ওপরে যাব ভাবছি।
তথ্যমতে, বাংলাদেশের বুকে সবচেয়ে বড় অবকাঠামোর নাম পদ্মা সেতু। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটারের সেতুটি ঢাকা বিভাগের দুই জেলা মুন্সীগঞ্জ আর শরীয়তপুরকে সংযুক্ত করেছে। সেতুর ডাঙার অংশ যোগ করলে মোট দৈর্ঘ্য ৯ কিলোমিটারের বেশি। স্টিল আর কংক্রিটের তৈরি দ্বিতল সেতুর ওপরের স্তরে রয়েছে চার লেনের সড়ক আর নিচে একক রেলপথ।
পদ্মা সেতুতে রয়েছে অত্যাধুনিক সিসি ক্যামেরা। সাধারণ আলোক সুবিধার পাশাপাশি সেতুতে রয়েছে আলোকসজ্জা ও সৌন্দর্য বর্ধনে রয়েছে আর্কিটেকচার লাইটিং। স্বাভাবিক সময়ে নদীর পানি থেকে সেতুর উচ্চতা প্রায় সাত ফুট। এর নিচ দিয়ে পাঁচ তলা উচ্চতার নৌযান চলাচল করতে পারবে। ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা বহুমুখী সেতু রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য বড় শহরের সঙ্গে দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সড়ক ও রেল যোগাযোগ স্থাপন করবে। পদ্মা সেতু দক্ষিণ এবং পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার উন্নয়নের সঙ্গে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।