জাতীয়

বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতির সম্ভাবনা

বন্যায় বাংলাদেশের সব প্রধান নদ-নদীর পানি বাড়ছে৷ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বিভিন্ন এলাকায় মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণের আশঙ্কা রয়েছে।

এর ফলে আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণা জেলার বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে। এ সময় তিস্তার পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি অথবা ওপরে অবস্থান করবে। লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ ও জামালপুর জেলার বন্যা পরিস্থিতি অবনতির সম্ভাবনা রয়েছে।

এ ছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টায় টাঙ্গাইল, মুন্সীগঞ্জ ও শরীয়তপুর জেলার নিচু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ বিভাগ জানিয়েছে, সোমবার পর্যন্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

সিলেটে উজানের ঢল, টানা বৃষ্টিতে বন্যার স্রোতে ভেসে গেছে ঘর, আসবাবপত্র ও গবাদিপশু। শস্যখেত ডুবে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা।

এদিকে, আগামী মঙ্গলবার থেকে দেশের বন্যাকবলিত এলাকায় পানি কমতে শুরু করবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান। পরিস্থিতি সামলাতে এরই মধ্যে সুনামগঞ্জ ও সিলেটে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার সড়ক ও বাড়িঘর পানিতে ডুবে থাকলেও শহর থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। সুনামগঞ্জে ভ্রমণে গিয়ে বন্যায় সুরমার চরে আটকেপড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল।

এদিকে বারহাট্টা উপজেলার অতীতপুর স্টেশন থেকে মোহনগঞ্জ উপজেলার বিরামপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন অংশের রেললাইন পানির তলায় তলে গিয়েছে। বন্যার পানি বাড়তে থাকায় স্থানীয় প্রশাসন পানিবন্দি মানুষদের যত দ্রুত সম্ভব উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠিয়ে যাচ্ছেন। তাদের শুকনো খাবারও দেওয়া হচ্ছে।

স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, বন্যার কারণে যেসব জেলার ব্যাংকের শাখা ও উপশাখায় স্বাভাবিক ব্যাংকিং কাজ করা যাচ্ছে না, সেগুলো বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সিলেট ও সুনামগঞ্জে পানিতে তলিয়ে গেছে ব্যাংকগুলোর এটিএম বুথ। যেসব ব্যাংকের শাখা নিচতলায়, সেগুলোও পানিতে ডুবে গেছে।

এ ছাড়াও বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে ইন্টারনেট, মুঠোফোনের মাধ্যমে ব্যাংকিং পরিষেবাও বন্ধ হয়ে পড়েছে।

নেত্রকোণায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

সুনামগঞ্জ ও সিলেট পার্শ্ববর্তী জেলা নেত্রকোণায়ও প্রতিদিন বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। জেলার ১০টি উপজেলার মধ্যে ছয়টিই এর মধ্যে প্লাবিত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে হাওর-সংলগ্ন খালিয়াজুড়ি, কলমাকান্দা ও মোহনগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকা৷ নেত্রকোণার কলমাকান্দা, দুর্গাপুর ও বারহাট্টা উপজেলায় বন্যার পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে৷ হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারেও অবনতি হয়েছে। নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলায় ত্রাণসামগ্রী বিতরণের সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ছাত্রলীগের এক নেতা আবির আহমেদ খান রুজেলের মৃত্যু হয়েছে।

বন্যা মোকাবিলায় সব প্রস্তুতি আছে : শেখ হাসিনা

রোববার সকালে এক অনুষ্ঠানে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ নিজ কার্যালয়ে ‘সাফ চ্যাম্পিয়ন-২০২১ বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী জাতীয় ফুটবল দল’-এর সংবর্ধনা ও আর্থিক সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, এবারের বন্যাটা একটু বেশিই ব্যাপক হারে এসেছে। প্রতিনিয়ত খবর রাখছি। বন্যার বিপদ মোকাবিলার সব প্রস্তুতি আছে। বিশেষ করে ময়মনসিংহ বিভাগ, রংপুর বিভাগেও বন্যার সম্ভাবনা আছে। সেটা আগে থেকেই সতর্কতা আমরা নিচ্ছি এবং সেই ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি। পানি নিষ্কাশনের জন্য যা যা করণীয় আমরা সেটাও করে যাচ্ছি। সৌজন্যে : ডয়েচে ভেলে

সম্পর্কিত সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker