আগামী দুই দিন সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হবার কোন সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। গেল ২৪ ঘণ্টায় সেখানকার সব জায়গায় পানি আরো বেড়েছে। শনি ও রোববারও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
শনিবার, বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান আরও জানান, আরও বৃষ্টির হবার সম্ভাবনা থাকায় সেসব এলাকার বন্যার পানি আরও বাড়তে পারে বলে তারা আশঙ্কা করছেন। সেই সঙ্গে যমুনা নদীর পানিও বাড়তে শুরু করেছে।
তিনি জানান, এরিই মধ্যে সুনামগঞ্জের ৯০ ভাগ এলাকা তলিয়ে গেছে। আর সিলেট জেলার ৬০ ভাগ এলাকা ডুবে গেছে। রোববার পর্যন্ত ভারি বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। বৃষ্টি কমলে, তারপর উজানের পানিও কমবে। উত্তরাঞ্চলেও নতুন করে এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
যমুনা পানি বাড়তে থাকায় ফলে উত্তরাঞ্চলের আরও কিছু জেলা প্লাবিত হতে পারে। বন্যার এই পানিটা আবার নীচের দিকে নেমে এলে মধ্যাঞ্চলের কিছু জেলাও প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা আছে। ভারতে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় তা দেশের কুড়িগ্রাম, সিলেট ও সুনামগঞ্জ দিয়ে প্রবেশ করছে।
ফলে জামালপুর, বগুড়া, শেরপুর, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, লালমনিরহাট, নীলফামারি ও পাবনায় বন্যা ছড়িয়ে পড়তে পারে। এছাড়া নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভিবাজারে বন্যা ছড়িয়ে পড়তে পারে। বন্যার পানি আরও নীচের দিকে নেমে এলে রাজবাড়ী, ফরিদপুর, শরীয়তপুর ইত্যাদি এলাকা প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
সিলেট, কানাইঘাট, সুনামগঞ্জ ও দিরাইয়ে সুরমা নদী, কুড়িগ্রামে ধরলা, চিলমারিতে ব্রহ্মপুত্র, লরেরগড়ে জাদুকাটা, কলমাকান্দায় সোমেশ্বরী নদীর পানি, নাকুয়াগাঁওয়ে ভোগাই বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাসও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। সেই সঙ্গে ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা নদীর পানিও বাড়ছে।
এদিকে, আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশেই বৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ২৩৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে। এছাড়া কিশোরগঞ্জের নিকলীতে ১৩৫, ময়মনসিংহে ১২৭, নেত্রকোনায় ২০৬, সীতাকুণ্ডে ১৮৮ ও সিলেটে ১০৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এ সময় ঢাকায় ৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় আট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়ার সঙ্গে বিজলি চমকানোসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ হতে পারে।