সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে তৃণমূল ভোটের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাছাই নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের এমন সিদ্ধান্তে কেন্দ্রের কোনো সায় নেই- এমন তর্ক তুলে নৌকার সম্ভাব্য প্রার্থীরা ছুটছেন ঢাকার উদ্দেশে। যেকোনো উপায়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে ইউনিয়ন নির্বাচন করতে আগ্রহী প্রার্থীদের তর সইছে না।
জানা গেছে, রবিবার বিকেলে বিয়ানী বাজারের ১০টি ইউনিয়নে তৃণমূলে ভোটে প্রার্থী বাছাই করা হয়। এতে টাকা, সম্প্রদায় আর প্রভাবের কারণে যোগ্য অনেক প্রার্থী প্রথম স্থান অর্জন করতে পারেননি। ফলে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাছাই নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। উপজেলার আলী নগরে আহবাবুর রহমান খান, চারখাইয়ে মাহমুদ আলী, শেওলায় জহুর উদ্দিন, দুবাগে পলাশ আফজাল, কুড়ারবাজারে বাহার উদ্দিন, মাথিউরায় আমান উদ্দিন, তিলপাড়ায় বিবেকানন্দ দাস, মুল্লাপুরে আশরাফুল ইসলাম, মুড়িয়ায় হুমায়ুন কবির ও লাউতায় এম এ জলিল তৃণমূলের ভোটে শীর্ষস্থান অর্জন করেন। এমন খবর উপজেলাব্যাপী ছড়িয়ে পড়লে সর্বত্র নৌকার ভরাডুবির কথা আলোচিত হতে থাকে।
সূত্র জানায়, ১০টি ইউনিয়নে প্রশ্নবিদ্ধ প্রার্থী বাছাইয়ে কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ড নাখোশ হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রার্থী বদল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একাধিক ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থীরা নির্বাচন করতেও আট-ঘাট বাঁধছেন। বিশেষ করে নৌকা যারা পেতে চান, তারা ছুটছেন ঢাকায় লবিং করতে। তৃণমূলের ভোটে অনিয়ম তুলে ধরে কেউ আবার লিখিত অভিযোগও দিচ্ছেন। বিএনপির ওয়ার্ড পর্যায়ের সাবেক নেতা, যুদ্ধাপরাধী পরিবারের সদস্যসহ একাধিক বিতর্কিত ব্যক্তি তৃণমূলের ভোটে এগিয়ে আছেন। তাদের বিষয়েও তথ্য নিচ্ছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ থেকে এখানকার ১০টি ইউনিয়নে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নামের তালিকা সোমবার ঢাকায় প্রেরণ করা হবে। এই তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের আমলনামা গোয়েন্দা সংস্থা দ্বারা তদন্ত শেষে চূড়ান্ত প্রার্থী মনোনয়ন দেবে আওয়ামী লীগ।
বিয়ানীবাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাকসুদুল ইসলাম আউয়াল জানান, তিন ইউনিয়নের একক প্রার্থী এবং অন্য সাত ইউনিয়নের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে থাকা মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নামের তালিকা দলের কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডে প্রেরণ করা হয়েছে। সেখান থেকে চূড়ান্ত প্রার্থী অর্থাৎ নৌকার মাঝি নির্ধারণ করা হবে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন জানান, তূণমূলের ভোট শেষ কথা নয়। নেত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মনোনয়ন বোর্ডই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
আহমদ হোসেন আরো বলেন, বিতর্কিত কেউ তৃণমূলের ভোটে এগিয়ে থাকলে স্থানীয়দের পক্ষ থেকে অভিযোগ প্রেরণ করা হোক। আমরা সেটা খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেব।