বগুড়ার শেরপুরের বন বিভাগের অবহেলা অযত্নে বৃষ্টিতে পঁচে ও উঁই পোকা খেয়ে নষ্ট হচ্ছে বন বিভাগের চত্বরে সংরক্ষণ করে রাখা প্রায় ৩ লক্ষ টাকার ৮টা স্তুপের বিভক্ত গাছের গুল।
সম্প্রতি এবং অন্তত ২ বছর আগে উপজেলার বিভিন্ন ধরণের দামি গাছ ঝড়ে ভেঙে গিয়েছিল। পরে সেগুলো বনবিভাগ সংরক্ষণের জন্য সংগ্রহ করেছে। সেগুলো টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রয় করার কথা থাকলেও কোন গুরুত্ব না দেওয়ায় উঁইপোকা খেয়ে এবং বৃষ্টিতে পঁচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে ও বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, খোলা আকাশের নিচে গাছের গুলের ৮টি লট পড়ে আছে। সেগুলোর উপর দিয়ে কোন প্রকার টিনের সেডও নেই। লতাপাতায় ছেয়ে আছে সংরক্ষণ করে রাখা লড (গুল)। এসবের অনেক ডুম বৃষ্টির পানিতে পঁচে গেছে। ডুমগুলোর সাথে লাল রঙে লেখা রয়েছে নম্বর। ভেঙে পড়া এসকল গাছের গুল ছিল উপজেলা বন বিভাগের বনায়ন করা। ঝড়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গাছ পড়ে ছিল সেই গাছগুলো গুল করে বন বিভাগ সংরক্ষণ করে। এসকল গাছ নষ্ট যেন না হয় এজন্য কোনো টিনসেড করার কথা থাকলেও আছে খোলা আকাশের নিচে।
বন বিভাগে কর্মরত একজন নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক জানান, বড় স্যার এখানে থাকেন না। তাই তেমন গুরুত্বও নেই। গাছের গুলগুলো বিক্রয়ের কথা বলেছি। স্যার বলছে সরকারি গাছের গুল যা হয় হোক।
এ নিয়ে উপজেলার বন বিভাগে কর্মরত একজন গার্ড মকবুল জানায়, মেহগনি ও আকাশমনি, ইউক্যালিপটাসসহ বিভিন্ন জাতের গাছের ডুম রয়েছে। কেটে রাখা গাছের সংখ্যা কত তা তার জানা নেই। বাগানমালী শাহজাহান বলেন, গাছের গুল এ বছর থেকে তিনবছর আগের কাটা। উপজেলার বিভিন্ন সড়কে এসব গাছ বনায়ন করা হয়েছিল। গাছগুলো ঝড়ে ভেঙে পড়ে সেই ভেঙে পড়া গাছের বয়স অন্তত ১২-১৫ বছর মধ্যে।
বন বিভাগ চত্বরে ঘুরতে আসা আবু তালহার সঙ্গে দেখা তিনি জানান, কেটে রাখা ডুমগুলোর মধ্যে ভালো কাঠ রয়েছে। অনেকগুলো পঁচে গেছে। দ্রুত বিক্রি না করা হলে বৃষ্টিতে গাছের বাকী ডুমগুলোও পঁচে নষ্ট হয়ে যাবে। এছাড়া ভালো দামও পাবেনা বন বিভাগ।
খানপুর ইউনিয়নের ভাটরা এলাকা থেকে গাছের চারা কিনতে আসা রাসেল ও আসলাম জানায়, আমরা এখান থেকে বিভিন্ন চারা ক্রয় করে নিয়ে যাই। বন বিভাগের সংরক্ষিত চত্বরে গাছের গুল গুলো পঁচে নষ্ট হচ্ছে সেই খোঁজ কেউ রাখেনা।
স্থানীয় ‘স’ মিল মালিক ফারুক জানান, বনবিভাগের মাধ্যে অনেক মূল্যেবান গাছের ডুম পঁচে গেছে। যা দিয়ে জালানির খড়ি ছাড়া কাঠ বের হবে না আর। এগুলোর মুল্য এখন অর্ধেকও হবে কিনা সন্দেহ আছে।
দায়িত্বপ্রাপ্ত শেরপুর ফরেষ্টার সামছুল আলমের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে তাকে অফিসে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে কোন বক্তব্য দিতে অপারকতা স্বীকার করেন।