১২ বছরের কিশোর ও ১৮ বছরের মেয়ের বিয়ে: শশুরের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ পুত্রবধূর

স্বপন মাহমুদ, জামালপুর প্রতিনিধি:

জামালপুরে সরিষাবাড়ীতে রিফাত মিয়া নামে ১২ বছরের এক কিশোরের সাথে ১৮ বছরের এক তালাকপ্রাপ্ত কন্যার বিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। 

বিবাহের পরে ওই নববধূকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন (শশুর) জামাল উদ্দিন। এমন ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) সরিষাবাড়ী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সেই নববধূ ও তার পরিবার। পরর্বতীতে একই দিনে ছেলের পরিবারও থানায় অভিযোগ করেন।

অভিযোগ ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, গত সেপ্টেম্বর মাসের ১তারিখে পৌরসভার বাউসি গজারিয়া গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে রিফাত মিয়া (১২) সাথে উপজেলা ডোয়াইল ইউনিয়নের হাটবাড়ী গ্রামের রফিকুল ইসলামের তালাকপ্রাপ্ত মেয়ে রূপালি আক্তারের আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বিতীয় বিবাহ হয়। সেই বিবাহের রেজিস্টারি করে সেংগুয়া গ্রামের মাহবুবুর রহমান নামে এক কাজী।

বিবাহের পরে (শশুর) জামাল উদ্দিন পুত্রবধূকে ফিরনি আনতে যায় হাটবাড়ী এলাকায়। হটাৎ পথিমধ্যে অন্ধকারে অটো-গাড়ির ভিতরে পুত্রবধকে জড়িয়ে ধরে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে জামাল উদ্দিন। 

পরে এ ঘটনায় দুই পরিবারের মধ্যে সমঝোতা হলেও পরবর্তীতে বিবাহিত কিশোর রিফাত তার স্ত্রীকে রাতে ঘুমের মধ্যে গলা টিপে ধরে। পরে স্ত্রীর ডাক চিৎকারে আশপাশে লোকজন ছুটে এলে স্বামী রিফাত জানায় তার বাবার নামে বদনাম বের করেছে বলে সে প্রতিশোধ নিচ্ছে। পরে স্থানীয়রা রূপালিকে উদ্ধার করে কয়েকদিন পর বাবার বাড়ি হাটবাড়ীতে পাঠিয়ে দেন। পরে শশুর জামাল উদ্দিনকে প্রধান আসামি করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নববধূ রূপালি আক্তার। এই নিয়ে দুই গ্রামের মানুষের মাঝে শুরু হয়েছে যতো কানা-ঘোঁষা।

এ-ঘটনার অভিযোগ অস্বীকার করে কিশোর রিফাতের বাবা জামাল উদ্দিন বলেন, ‘এসব মিথ্যা কথা। এই বিয়েতে আমি রাজি ছিলাম না, আমার ছেলে ‘না বালক’ তারা জোর করে ২লক্ষ ৫০ হাজার টাকা কাবিন করে বিবাহিত মেয়েকে আমার ছেলের সাথে বিয়ে দিয়েছে। এবিষয়ে আমরাও থানায় অভিযোগ জানিয়েছি।

কিশোর রিফাত মিয়া বলেন, ‘তাদের গ্রামের শুক্কুরের ছেলে সুমন মিয়া রূপার পরিচিত আত্মীয়। সমুন কম্পিউটারের মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধনে বয়স বৃদ্ধি করেন। পরে সেটা দিয়ে বিয়ে হয় তার।

এঘটনায় রূপালি আক্তারের মা রুনা বেগম বলেন, ‘তারা প্রস্তাবে মাধ্যমেই দেখে শুনে বিয়েতে রাজি হয়েছে। কিন্তু ছেলের বাবার চোখ খারাপ। আমার মেয়ের সাথে খারাপ আচরণ করেছেন। আমরা বিচারের জন্য থানায় অভিযোগ দিয়েছি। এদিকে মাহবুবু কাজীর কাছে বিবাহের কাবিন নামার (নকল) চাচ্ছি কিন্তু সে দিচ্ছে না। 

এ-ব্যাপারে সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) মুশফিকুর রহমান জানান, এঘটনায় উভয় পক্ষের অভিযোগ থানায় এসেছে, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ; পৌরসভার জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী ছেলে রিফাতের জন্ম সাল-২৭/১১/২০১১ইং যা বর্তমান বয়স ১২বছর। এদিকে ডোয়াইল ইউনিয়ন থেকে রূপা আক্তারে জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী জন্ম সাল-২৮/০৮/২০০৬ যা বর্তমান বয়স ১৭+বছর। সেপ্টেম্বর মাসের ১তারিখে মহাদান ইউনিয়নের কাজী মাহবুবুর রহমান (মেম্বার) এই বিবাহের রেজিস্টারি করেন। 

এ-বিষয়ে কাজী মাহবুব মেম্বার বলেন, ’মেয়ের বয়স হয়েছে। ছেলে পক্ষ থেকে প্রাপ্ত বয়সের একটি জন্মনিবন্ধন দিয়েছে। সেখানে ছেলের বয়স হয়েছে। আমার কাছে সব ডকুমেন্ট আছে।