মাহফুজ হাসান,কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:
সময়ের বিবর্তনে ফ্রী ফায়ার, পাবজি,বা লুডু, ক্যারাম ইত্যাদি মোটকথা অনলাইনের এসব খেলার নিচে চাপা পড়ে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে বিলুপ্তির পথে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাটিম খেলা।
শিশু কিশোররা ডানপিটে যে বয়সটাতে লাটিম, মারবেল,ডাঙ্গুলি,মন বাড়ি মন্তুস,গোল্লাছুট, বউচি ইত্যাদি ঐতিহ্যগত খেলায় দুরন্ত সময় কাটাতো আর এখন তথ্য প্রযুক্তির যুগে কৈশোর মনের আবেগের বলিদান হলো বিভিন্ন অনলাইন খেলায়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন শিশু -কিশোরদের ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছেন অনেক অভিভাবক অপ্রাপ্ত বয়সে এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন কিনে দিয়ে।
উপজেলার সাহেবের চর গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠ আব্দুল লতিফ বলেন,গ্রামের শিশু কিশোররা এক সময় মনের আনন্দে গ্রামের মেঠোপথে, বাড়ির আঙ্গিনায়, হাতের তালুতে লাটিম ঘুরাতো।বনবন করে ঘুরতো লাটিম।লাটিম খেলা যদি আবার ফিরে আসতো তাহলে মোবাইল গেমসের আসক্ততা কমতো কিশোরদের।
হোসেনপুর মডেল প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম তারেক নেওয়াজ বলেন,জীবনে অনেক খেলেছি এ লাটিম খেলা।ছোট বেলায় অনেক মধুর সময় কাটতো।গ্রামেই তৈরি করা হতো লাটিম, নরম কাঠ, গাব গাছের ডাল, পেয়ারা ও লৌহশলা দিয়ে লাটিম এবং ঘুরানোর জন্য পাট দিয়ে রশি বা ফিতা বানানো হয়। লৌহশলাকে অক্ষ বানিয়ে কাঠের গোলকটিকে লাটিম খেলোড়রা ২-৩ হাত লম্বা এক টুকরো রশ্মি অক্ষশীর্ষ থেকে ক্রমশ গোলকটির নিম্নর্ধ সুষমভাবে পেচিয়ে প্রধানত তর্জনী ও বৃদ্ধাঙ্গুল ব্যবহার করে উচু থেকে ছুড়ে মাটি বা কিছুর তলে বা হাতের তালুতে ঘুরায়।
হোসেনপুর সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যাপক এবিএম ছিদ্দিক চঞ্চল বলেন,
আধুনিকতার ছোয়ায় কম্পিউটার গেমস,ভিডিও গেমসসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ে ব্যাস্ত থাকে বর্তমান প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা, এসবের ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে লাটিম খেলা।মোবাইল ফোনের আসক্তি থেকে ছেলে মেয়েদের বের করে আনতে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে।