গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার শ্রীফলতলী ইউনিয়নের গাবতলী এলাকায় শনিবার বুইড়ার বিলে ও মৌচাক ইউনিয়নের সাহেবাবাদ এলাকার গজারিয়া বিলে মাছ ধরার মহোৎসব শুরু হয়েছে। ভোর হতে না হতেই ওই দুই বিলে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে মৌসুমী জেলে ও সৌখিন মাছ শিকারিরা মাছ ধরার জন্য ছুটে আসে। এতে স্থানীয়রা মাছ শিকারে মেতে ওঠে।
এলাকাবাসী ও মাছ শিকারীরা জানান, উপজেলার দুইটি বিলের পানি একেবারে কমে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকার লোকজন শনিবার মাছ ধরবে এই দিনটি নির্ধারণ করেন। পরে তা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয় জনসাধারণকে।
এ তথ্য পেয়ে এলাকার মাছ শিকারী ভোরে দূর-দূরান্ত হতে গাড়ির বহর নিয়ে মাছ শিকারে দলবেঁধে মাছ ধরার উপকরণ নিয়ে বিলে আসেন। এ সময় তারা মাছ ধরার উপকরণ পলো, ধর্মজাল, চাবি, ঠেলাজাল, ঢোলনা জাল, ঝাঁকি জাল, টেটা নিয়ে বিল বাইচে দলবেঁধে হাজির হন। বড়দের পাশাপাশি শিশুরাও মাছ ধরার উৎসবে মেতে ওঠে।
ভোর হতে বিকাল পর্যন্ত এই উৎসবে মেতে ওঠে মাছ ধরা। বিল বাইচে মাছ শিকারিরা মাছ ধরে মহা খুশি।
ভাওয়াল মির্জাপুর থেকে আসা মাছ শিকারী মোহাম্মদ আলী ও হামিদ মিয়া জানান, বিল বাইচের কথা শুনে এসেছি, কারণ গজারিয়া বিল ঐতিহ্যবাহী পুরাতন বিল, এই বিলে প্রচুর পরিমান বড় বড় মাছ আছে। আর একই সাথে দুইটা বিল পাশাপাশি বিল বাইচ হইছে।
অপরদিকে এলাকার মাছ শিকারি শরিফ ও হান্নান জানান, গজারিয়া বিলে প্রচুর মাছ রয়েছে। তাই এসেছি, এসে দেখি বিভিন্ন প্রজাতির মাছ এখানে আছে রুই, কাতল, মৃগেল, বাঘাইর, শোল, কারপো, টাকি, বোয়াল, মাগুর, শিং, বাইম, টেংরা, পুটি, ভেরা, মলা, দেশিয় মাছ শিকার হচ্ছে।
দুইটি বিলের পাশের গাবতলী ও গজারি গ্রামের গ্রামবাসী শাকিল, কবির, সুজন,আহম্মদ জানান, ঘুম থেকে ওঠে দেখি মাছ শিকারীদের চিৎকার ও আওয়াজ ।
এসে দেখি হাজার হাজার মাছ শিকারীর সমাগম। তারা প্রচুর পরিমাণ মাছ ধরছে। তবে বর্ষা মৌসুমে অবৈধভাবে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ শিকার করা বন্ধ করলে প্রতি বছর দেশীয় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করা এবং স্থানীয় মানুষের আমিষের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে বলে স্থানীয় সচেতন মহল মনে করে।
উপজেলা মৎস অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো: সলিমুল্লাহ জানান, সব জলাশয় থেকে উন্মুক্ত মাছ ধরা নিষেধ থাকলেও শত শত গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে মাছ শিকার করলে আমাদের কিছু করার থাকে না। প্রতি বছরই প্রতি শনিবার উপজেলার কোথাও না কোথাও এ রকম দলবদ্ধ হয়ে মাছ শিকারীরা উন্মুক্ত মাছ শিকার করে নিয়ে যায়।