ঠাকুরগাঁও

শীতের আগমনী বার্তায় বেড়েছে লেপ তোষকের চাহিদা

শীতের আগমনী বার্তায় হিমালয়ের কোল ঘেঁষা দেশের উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে শীত নিবারণের উপকরণ তৈরির ব্যস্ততায় ফিরছে লেপ-তোষক কারিগররা। শীত মানেই প্রশান্তির ঘুমের জন্য সবচেয়ে উপযোগী ঋতু। আর এই শীত ঝেঁকে বসার আগেই ব্যস্ত সময় পার করছেন এখন লেপ-তোষক তৈরির কারিগররা।

এ মাসেই জেলায় শীতের আমেজ অনেকটা শুরু হয়েছে। ভোররাতে হালকা ঠান্ডা আর সকালের মৃদু শীত শীত ভাব বলে দিচ্ছে দরজায় কড়া নাড়ছে শীতের আগমনী বার্তা। সেইসঙ্গে ভোরের মিষ্টি রোদে মাঠের সবুজ ঘাসের গায়ে লেগে থাকা শিশির বিন্দুর ঝলকানি শীতের সকালের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে জেলাবাসীকে। ষড় ঋতুর বাংলাদেশে শীতের আগমনী বার্তা শীতকালে হওয়ার কথা থাকলেও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে তা ঋতুর সাথে তাল মিলছে না।

গ্রাম বাংলায় আজও প্রবাদ আছে আশ্বিনে গা করে শিন-শিন। কিন্তু প্রকৃতির লীলা খেলায় কার্তিক মাসের শেষ ভাগে সকাল হলেই ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন আর শীতের আমেজ দেখা যাচ্ছে। আবার সূর্য ওঠার কয়েক ঘণ্টার পরেই রোদের তাপে শীত কুয়াশা দূর হয়ে গরমে ঘাম ঝরছে এই এলাকার মানুষের।

এদিকে সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে প্রায় সারারাত ধরেই মাঝারি ধরনের শীতের কারণে অনেক বাসা-বাড়িতে শীত নিবারণের জন্য হালকা কাঁথা ও কম্বল ব্যবহার শুরু হয়েছে। আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে শিশু ও বৃদ্ধদের শীতজনিত নানা ধরনের রোগের পাদুর্ভাব কিছুটা দেখা দিয়েছে। সরেজমিনে ৫টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, কনকনে শীত ঝেঁকে বসার আগেই তা মোকাবিলা করার জন্য অধিকাংশ হাট বাজারের লেপ তোষকের কারিগর ও পাড়া-মহল্লার মানুষ বাড়িতে বাড়িতে লেপ-তোষক তৈরি করছে।

দিন যতই গড়াচ্ছে শীত ততই বেশি পড়ার আশঙ্কায় উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষেরা নতুন নতুন লেপ তৈরি করছে। লেপ তৈরির কারিগররা শীতের সাথে পাল্লা দিয়ে অর্ডার নিলেও যথা সময়ে সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছে। জেলার রুহিয়া, লোহাগাড়া, কাঠালডাঙ্গী বাজার-রাণীশংকৈল, গড়েয়া বাজারসহ ঠাকুরগাঁও সদরে লেপ-তোষকের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপস্থিত আর কারিগরদের ধুনুক দিয়ে তুলা ফাটানোর সরগরমেই যেন বলে দিচ্ছে লেপ-তোষক তৈরির ধুম পড়েছে।

সদর উপজেলা পৌরসভা এলাকার লেপ-তোষক ব্যবসায়ী ইউনুস আলী জানান, এ সময়ে অনেকে ক্রেতারা নিজ নিজ পরিবারের সদস্যদের জন্য লেপ-তোষক, বালিশসহ শীতবস্ত্র বানাতে দিচ্ছেন ও অনেকেই আবার বানিয়ে নিয়েছেন। তবে লেপ-তোষক তৈরির কাঁচামাল তুলা ও কাপড়ের দাম একটু বেশি।

তিনি আরও বলেন, বাজারে প্রতি কেজি গার্মেন্টস তুলা (সাদা) ৬০ থেকে ১২০ টাকা, গার্মেন্টস তুলা (কালো) ৫০ থেকে ৭০ টাকা, শিমুল তুলা ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, কার্পাস তুলা ২১০ থেকে ২৯০ টাকায় বেচাকেনা হচ্ছে।

পীরগঞ্জ উপজেলার লোহাগড়া বাজারের ব্যবসায়ী প্রদীপ রায় জানান, এ বছর লেপ-তোষক তৈরিতে গত বছরের চেয়ে দুই থেকে তিনশত টাকা বেশি লাগছে। তাছাড়া একটি তোষক এক হাজার থেকে দুই হাজার পাঁচশত টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker