জাতীয়

রিমালের ক্ষতে দাঁড়িয়ে বাঁচার আকুতি

মিথ্যা আশ্বাস আর নয়; এবার টেকসই বাঁধ চাই, আর চাই না ভাসতে; এবার দিন বাঁচতে, উপকূলের কান্না; শুনতে কি পান নাএমন বিভিন্ন স্লোগান তুলে মানববন্ধন করেছে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূলের সহস্রাধিক তরুণ ও স্থানীয় এলাকাবাসী।

উপকূলীয় এলাকায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবিতে মঙ্গলবার (২৮ মে) বিকেলে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ইউনিয়নের পাতাখালী পয়েন্টে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধের ওপর এ মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়।

উপকূলবাসীর আয়োজনে মানববন্ধনটিতে স্থানীয় বাসিন্দা মাওলানা আব্দুল মাজেদের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন আবু তাহের, মোক্তার হোসেন, তরিকুল, স ম ওসমান গনি সোহাগ, মাসুম বিল্লাহ, নিসাত, রায়হান প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা বলেন, ‘শুধু রিমালই নয়, প্রতিবারই এমন পরিস্থিতিতে কর্তা ব্যক্তিরা শুধু আশ্বাসের বুলি আওড়ান।

শোনান নানা ধরনের মেগাপ্রকল্পের গল্প। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আমাদের এই অঞ্চলে এখনো পর্যন্ত কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। উপকূলের মানুষকে বাঁচাতে টেকসই বেড়িবাঁধের বিকল্প নেই।’

তারা বলেন, ‘টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে ব্যর্থ হলে সাতক্ষীরা উপকূলীয় অঞ্চলকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে স্থানীয়দের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেন। আমরা বারবার নয়, একবারই মরতে চাই।’

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ষাটের দশকের বেড়িবাঁধ প্রায় অর্ধশত বছর ধরে জোড়াতালি দিয়ে চালানো হচ্ছে। এ কারণে সামান্য ঝড় বা জলোচ্ছ্বাসের কথা শুনলেই আঁতকে ওঠে উপকূলের মানুষ। তারা ঝড়কে ভয় পায় না, উপকূলের মানুষ ভয় পায় বাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হওয়াকে।

উপকূলীয় এলাকায় স্থায়ী বেড়িবাঁধ না থাকার কারণে ২০০৯ সালে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় আইলায় এ এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি হয় উল্লেখ করে তারা বলেন, কয়েক বছর সাগরের লোনা পানিতে বন্দি থাকতে হয় হাজার হাজার পরিবারকে। এ সময় টিকতে না পেরে শত শত মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে অন্য এলাকায় চলে গেছে।

বক্তারা আরো বলেন, আইলার সময়ই উপকূলীয় এলাকার ভঙ্গুর বাঁধ টেকসই করার বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়; কিন্তু পার্শ্ববর্তী গাবুরায় মেগাপ্রকল্পের কাজ শুরু হলেও ক্ষতিগ্রস্ত এই এলাকায় এক যুগেও তা আর হয়নি। এ কারণে সামান্য জোয়ারের পানিতে বাঁধ ভেঙে এই এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

মানববন্ধনটিতে বক্তরা অভিযোগ করে বলেন, উপকূলের মানুষকে জিম্মি করে বাঁধ ভাঙার আশায় থাকেন এক শ্রেণির অসাধু জনপ্রতিনিধি ও ঠিকাদাররা।

বাঁধ মেরামতের নামে তারা লাখ লাখ টাকা লোপাট করেন। তাই উপকূলীয় এলাকার মানুষকে বাঁচাতে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানান বক্তারা।

Author


Discover more from MIssion 90 News

Subscribe to get the latest posts to your email.

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker