হাসপাতালে থাকা মুমূর্ষু রোগীর যখন রক্তের প্রয়োজন হয়। রোগীর স্বজনরা রক্তের জন্য বিভিন্ন জায়গায় সন্ধ্যান করেন, অনেকে রক্ত না পেয়ে বানিজ্যিক ব্লাড-ব্যাংক থেকে টাকার বিনিময়ে ক্রয় করেন প্রয়োজনের তাগিদে। আবার অধিকাংশের বেশি রোগীর স্বজনরা দারস্থ হন, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী রক্তদান সংগঠনে।
মানুষকে বিনামূল্যে রক্তদাতা খুঁজে দেওয়ার জন্য তৈরি হয়েছে বহু স্বেচ্ছাসেবী রক্তদাতা সংগঠন। এসব সংগঠন মানুষকে বিনামূল্যে রক্ত সংগ্ৰহ করে দিয়ে মানবসেবায় অবদান রাখছেন। অধিকাংশের বেশি সংগঠনগুলো কার্যক্রম পরিচালনা করেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। মুমূর্ষু মানুষের রক্তের প্রয়োজনে সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন গ্ৰুপে রক্ত চেয়ে পোষ্ট করেন রোগীর স্বজন। রোগীর তথ্যসহ যোগাযোগ নাম্বার দেওয়া থাকে।
এরকমের গ্ৰুপগুলোর সাথে সংযুক্ত হয়ে নিরব থাকা প্রতারক চক্র রক্তের রিকোয়েস্ট এলে রোগীর স্বজনদের টার্গেট করে রক্ত দেওয়ার কথা বলে কল দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে প্রতারণা করে। মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলতে বিভিন্ন ধরনের পন্থা অবলম্বন করেন রক্তের প্রতারক চক্র। রক্ত দেওয়ার কথা বলে, যাতায়াত ভাড়া টাকা দাবি করে। যেমন: রক্ত দিতে যাবো গাড়ি ভাড়া নেই, মোটর সাইকেলের তেল শেষ, দূরে আছি , হাসপাতাল পৌঁছানোর মতো পর্যাপ্ত টাকা নেই ইত্যাদিসহ আরো বিভিন্ন মাধ্যমে রক্ত দেওয়ার কথা বলে মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়।
মুমূর্ষু রোগীর জন্য ইমারজেন্সি রক্তের প্রয়োজন তাই অপরিচিত মানুষ কল দেওয়ার মাত্র বিশ্বাস করে টাকা দেয় রোগীর স্বজন। টাকা পাওয়ার পর প্রতারক চক্র মোবাইল ফোন বন্ধ করে নাম্বার ব্লক করে দেয়। তখন রোগীর স্বজনরা জটিল সমস্যা পড়ে যায়। একদিকে প্রতারিত হয়ে টাকা হারায়, অন্যদিকে রক্ত মেনেজ হয় না। প্রতারক চক্রের কারণে অনেক রোগী সঠিক সময়ে রক্ত না পেয়ে মারা যায়। প্রতিনিয়ত অনলাইনে প্রতারক চক্রের প্রতারনার সংখ্যা বহুগুনে বেড়েই চলছে।
রক্তের প্রতারক চক্র প্রতিরোধে সচেতন হতে হবে, অন্যকে সচেতন করতে হবে। সচেতনতার মাধ্যমে রক্তের দালাল প্রতারক চক্র থেকে নিস্তার পাওয়া সম্ভব। প্রকৃত রক্তদাতা কখনো রক্ত দেওয়ার কথা বলে অগ্ৰিম গাড়ি ভাড়া বা অতিরিক্ত টাকা চাইবেন না। যারা টাকা চায়- তারা প্রতারক চক্র। প্রতারিত হলে আইনের আশ্রয় নিন। উক্ত নাম্বারে মামলা করুন, তাহলে প্রতারক আইনের আওতায় আসবে।
সর্বোপরি, সচেতনতার মাধ্যমে রক্তের প্রতারক চক্র থেকে বাঁচা সম্ভব। রক্তের প্রয়োজনে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করুন! তারা বিনামূল্যে আপনাকে রক্ত ম্যানেজ করে দিবেন। অনলাইনে রক্তের প্রতারক চক্র থেকে নিস্তার পেতে সচেতন হন এবং প্রতারিত হলে অবশ্যই আইনের আশ্রয় নিন। সচেতনতাই পারে প্রতারক চক্রের প্রতারনা থেকে বাঁচাতে।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts to your email.