কৃষি ও পরিবেশঠাকুরগাঁও

ঠাকুরগাঁও পীরগঞ্জে গাছে গাছে ঝুলছে ভারতের দার্জিলিং জাতির কমলা

ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার বীরহলি গ্রামের আবু জাহিদ ইবনুল ইকরাম জুয়েল। ২নং কোষারাণীগঞ্জ ইউনিয়নের মালঞ্চা গ্রামে ৩ বিঘা জমির উপরে করেছেন ভারতীয় দার্জিলিং জাতের কমলার বাগান। বাগানটিতে রয়েছে আড়াইশ গাছ।

গাছ গুলোর বয়স ১০ বছর হলেও সপ্তমবারের মতো এবার গাছ থেকে কমলা সংগ্রহ করা হচ্ছে। ১০ বছর আগে চারা গুলো জেলা হর্টিকালচার থেকে প্রতি চারা ৫টাকা করে ক্রয় করেছিলেন তিনি। যদিও তার এই বাগান করার ইচ্ছা ছিল না। শুধু হর্টিকালচার সেন্টারের কর্মকর্তাদের জোর ক্রমে তিনি এই চারা গুলো কিনেছিলেন। এখন সেই আড়াইশ গাছ থেকে বাৎসরিক কমলা ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকার বিক্রয় হওয়ার আশা করছেন উদ্যোক্তা জুয়েল।

বাগানের গাছের ডালে থোকায় থোকায় ঝুলছে বড় বড় কমলা। কমলার ভারে নুয়ে পড়েছে গাছের ডালপালা। এ যেন এক নয়নাভিরাম দৃশ্য। আর এই প্রাকৃতিক পরিবেশে এমন অপরূপ মুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে স্থানীয়দের মতো প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজারো মানুষ আসছেন এই বাগানে। বাগানটি দেখে উচ্ছ্বাসিত হচ্ছেন অনেক মানুষ। বাগানেই বিক্রি হচ্ছে এসব কমলা। এখানকার কমলা স্থানীয় বাজারের চাহিদা পুরণের পাশাপাশি সরবরাহ হচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। এতে এই কমলার বাগানটি হওয়ার ফলে যেমন পুষ্টি ও ভিটামিনের চাহিদা পুরণ হচ্ছে তেমনি অনেকের হয়েছে কর্মসংস্থান। ইউটিউবে দেখে শরিয়তপুর থেকে আগত এক দর্শনার্থী জানান, দার্জিলিং এর মতো এতো সুন্দর বড় বড় কমলা হয়েছে এখানে তা দেখে তিনি অভিভূত, মুগ্ধ ও আনন্দিত হয়েছেন। 

একইভাবে দেখতে আশা অন্যান্য দর্শনার্থীরাও এমনি মুগ্ধ হয়েছেন বলে জানান তারা। আড়াইশ গাছে আড়াইশ থেকে তিনশ মণ কমলা হবে বলে ধারণা করেন বাগানটির উদ্যোক্তা। তিনি জানান, এ পর্যন্ত বাগানটিতে তিন থেকে চার লক্ষ টাকা খরচ হয় তার। আর কেউ যদি এমন বাগান করতে চায় তাহলে তার পক্ষ থেকে কমলা চাষ বিষয়ে সবধরণের সহযোগিতা করবেন বলে জানান সফল এই উদ্যোক্তা।

জেলা কৃষি অধিদপ্তরের সূত্র মতে, পীরগঞ্জের জুয়েলের বাগান ছাড়াও জেলায় চার দশমিক আট হেক্টর জমিতে কমলা চাষ করা হচ্ছে। এছাড়াও মালটার বাগান আছে একশ তেইশ হেক্টর জমিতে। কমলা বাগানে কর্মরত শ্রমিকরা জানান, এখানে কাজ করে দিনে তাদের মুজুরি পরে চারশ টাকার মতো এতে সংসার সুন্দর মতো চলে।

এছাড়াও অনেক দূর দূরান্ত থেকে প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার থেকে ১৫শ’র মতো মানুষ আসে এই বাগানে দেখতে। জুয়েলের বাগানের সফলতা কমানা করে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক জানান, এই বাগানের কমলা দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছে এবং সকল যায়গায় দেশের উৎপাদিত কমলা হিসেবে খুব প্রশংসিত হচ্ছে। কৃষি বিভাগ থেকে লেবু জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি, সম্প্রসারণ ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের মাধ্যমে তাকে সহযোগিতা করা হচ্ছে।

এছাড়াও এমন উদ্যোগ এলাকবাসীকেও কমলা চাষে উদ্বুদ্ধ করছে বলে জানান তিনি। ভারতীয় দার্জিলিং জাতের কমলা হওয়ায় ও এ জাতের কমলা গাছ ৫০ বছর পর্যন্ত ফল দেয় ও এটি একটি অর্থকারি ফসল যা খুব সহজেই ও স্বল্প খরচে করা যায় বলে জানান, বাগানটির উদ্যোক্তা।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker