সাধারণত শীত এলেই সামনে আসে পিঠা-পুলির কথা। এক সময় বাড়িতে বাড়িতে চলতো পিঠা বানানোর উৎসব। কিন্তু গ্রাম-বাংলার চির-চারিত ওই রীতি এখন তেমন একটা চোখে পড়ে না। তারপরও শীতের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পিঠা বানানোর অনুষঙ্গ কিন্তু থেমে নেই এখনো। গ্রাম-গঞ্জের হাটে-বাজারের মোড়ে জমে ওঠে মৌসুমি পিঠার দোকান। সেখানে পাওয়া যায় হরেক রকমের পিঠা। এই পিঠা কারো বাড়তি আয়ের উৎস, আবার কারো বা জীবিকার মাধ্যম। তেমনই একটি কর্ম করে জীবিকার তাগিদে পিঠা পুলি বিক্রয় করে জীবিকা নির্বাহ করছেন আলহাজ্ব মিয়া (৪৫) নামে এক ব্যক্তি।
ল্যাম্প-পোষ্টের বাতির আলোতে তেমনই একটি চিত্র দেখা যায় জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় মহাদান ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের খাগুরিয়া গ্রামের সাজুর মোড়ে।
গত শনিবার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যা রাতে সাজুর মোড়ে পিঠা বিক্রেতা আলহাজ্ব মিয়ার কাছে পিঠা বিক্রয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে খাগুরিয়া গ্রামের মৃত দুলাল শেখের ছেলে। পেশায় একজন দিন মুজুর। অন্যের জমিতে কৃষি কাজ করেন এবং বাকী সময় টুকু প্রতি বছরের মত শীতের পিঠা বিক্রয় করেন। সংসারে সদস্য রয়েছেন- জুই আক্তার (৬), ছোঁয়া মনি (১) নামে দু’টি কন্যা সস্তান এবং তার সহধর্মিণী। সংসার খরচের জন্য কৃষি কাজের ফাঁকে বিকাল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত পিঠা বিক্রয় করেন।
তিনি আরো বলেন, পেট-ভাত জোগাতে মানুষকে কত কিছুই না করতে হয়। শীতের মৌসুমে প্রতিদিন বিকালে চুলা জ্বালিয়ে চিতই পিঠা-১০, ভাঁপা পিঠা-১০ টাকা, বেগুনি, পেঁয়াজো-৫ টাকা, মিঠা পিঠা-৫ টাকায় বানিয়ে বিক্রয় করেন। প্রতিদিন ৫০০-৬০০টাকা পর্যন্ত বিক্রয় করতে পারেন। পুঁজি কম তাই তেমন বেশি আকারের পিঠা তৈরি করে পারেন না। পুঁজি বাড়ানোর জন্য আর্থিক ভাবে কোন সহযোগীতা পেলে বেশি উপার্জন করা সম্ভব হবে। এখন যা উপার্জন হয়, তা দিয়ে কোন রকম সংসার খরচ চলে।
পিঠার দোকানের সামনে বসে থাকা ক্রেতারা বলেন, আলহাজ্ব প্রতিবছরই শীতের মৌসুমে এখানে বসে শীতের পিঠা বিক্র করেন। আমরা স্থানীয়রা অনেক সময়ই এখানে পিঠা খাঁই। তাছাড়া আশপাশের গ্রামের অনেক লোক এখানে এসে পিঠা খান। সে অনেক ভালো মানে পিঠা তৈরি করেন, খেতে অনেক সুস্বাদু।