টাঙ্গাইল

টাঙ্গাইলে ইউপি সচিব পদে নিয়োগ পরীক্ষা শিক্ষা কর্মকর্তার মেয়ের সর্বোচ্চ নম্বর, একই প্রশ্নে পরে ব্যর্থ, তদন্ত চেয়ে ডিসির চিঠি

টাঙ্গাইলে ইউনিয়ন পরিষদ সচিব পদে লিখিত পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করে উত্তীর্ন হয়ে নিয়োগ পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক নারীর বিরুদ্ধে। তার নাম আদ্রিতা রহমান । লিখিত পরীক্ষায় তার রোল নম্বর ছিল ২০০১১৯৮। তিনি টাঙ্গাইল জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা লায়লা খানমের মেয়ে। এঘটনায় বিবেকানন্দ স্কুল এন্ড কলেজের কেন্দ্র সচিব, সহকারি কেন্দ্র সচিব ও প্রার্থীর কক্ষের ইনভিজিলেটরের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মন্ত্রীপরিষদ সচিবের কাছে চিঠি দিয়েছেন টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ড: আতাউল গনি।

জেলা প্রশাসক চিঠিতে উল্লেখ করেছেন,গত ৭ জুন ইউনিয়ন পরিষদ সচিব ও হিসাব সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। ১৬ জুলাই লিখিত এবং ১৭ জুলাই ব্যবহারিক ও মৌখিক পরীক্ষা ফলাফল অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ১২ জন প্রার্থী চুড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হন। আদ্রিতা রহমান নামের এক মেয়ে সর্বোচ্চ ৬৯ নম্বর পেয়ে প্রথম হন। তিনি লিখিত পরীক্ষায় ৬০ ও ব্যবহারিকে শুন্য এবং মৌখিক পরীক্ষায় ৯ নম্বর পান। চুড়ান্ত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর জেলার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ এ প্রার্থীর বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন এবং নিয়োগ কমিটির কাছে অভিযোগ করেন। নিয়োগ কমিটির সভাপতি ছিলেন জেলা প্রশাসক আতাউল গনি, সদস্য ছিলেন পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার, টাঙ্গাইল পৌর সভার মেয়র এসএম সিরাজুল হক আলমগীর, স্থানীয় সরকার বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক শামীম আরা রিনি ছিলেন সদস্য সচিব। কঠোর গোপনীয়তার মাধ্যমে পরীক্ষার পুর্বরাতে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন,সংরক্ষণ ও পরীক্ষার দিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে পরীক্ষা শুরুর একঘন্টা আগে প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়।ওই প্রার্থী সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে নিয়োগ পাওয়ার ফলে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠায় অধিকতর যাচাইয়ের স্বার্থে একই প্রশ্নে তার পুনরায় পরীক্ষা নেওয়া হয়।স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক তার কক্ষে ওই প্রার্থীর পুনরায় পরীক্ষা নেন। পরীক্ষায় তিনি এলোমেলো আচরণ করেন এবং কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন নি। তার লিখিত পরীক্ষার নম্বর ও বাস্তব পরীক্ষার নম্বরের সাথে অসামাঞ্জস্য হওয়ায় নিয়োগ কমিটির সদস্যদের কাছে এটাই প্রতীয়মান হয়েছে তিনি যে কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়েছিলেন সেই কেন্দ্রের সচিব সহকারি সচিব ও কক্ষে ইনভিজিলেটেরর প্রত্যক্ষ সহায়তায় প্রার্থী এই অস্বাভাবিক নম্বর পেয়েছেন। এছাড়াও পরীক্ষার কেন্দ্রটি প্রার্থীর মা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রানাধীন হওয়ায় কেন্দ্র সচিব, সহকারি সচিব ও ইনভিজিলেটর দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অগোচরে পরস্পর যোগসাজসে সর্বোচ্চ নম্বর পেতে সহায়তা করতে পারেন। এঘটনায় জেলা প্রশাসক প্রকৃত ঘটনা উদঘানের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে পুলিশের বিশেষ বিভাগ সিআইডি দিয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।

টাঙ্গাইল জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা লায়লা খানম জানান,আমার মেয়ে আদ্রিতা রহমান টাঙ্গাইল বিবেকানন্দ হাই স্কুল এন্ড কলেজে ইউনিয়ন পরিষদ সচিব পদে পরীক্ষা দেয়। তবে সেখানে ওই পরীক্ষার আমার কোন হস্তক্ষেপ বা দায়িত্ব ছিল না। পরীক্ষার সকল দায় দায়িত্ব পালন করেছে জেলা প্রশাসন।

এ ব্যপারে জেলা প্রশাসক আতাউল গনি বলেন,নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা ও দুর্নীতি রোধে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে। যে প্রার্থীর বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে তার প্রকৃত সত্য উদঘাটন হওয়া প্রয়োজন। অপরাধ করে যাতে কেউ পার না পায়। ভবিষ্যতে যাতে কেউ এধরণের অপরাধ করতে না পারে সে জন্য আমরা অধিকতর তদন্তের জন্য লিখিত আবদেন করেছি। বিভিন্ন দপ্তরে সেই আবেদনের অনুলিপি দেওয়া হযেছে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker