কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে পানির নিচে তলিয়ে গেছে জমির পাকা ধান ও আলুক্ষেত। এতে মহাবিপাকে পড়েছেন চাষীরা। বোরো ধান ঘরে তুলতে এক প্রকার নাজেহাল হচ্ছেন কৃষকরা। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাতে উপজেলার কয়েকশত হেক্টর ধান ও আলুক্ষেতে পানি জমে গেছে। তাই ধান কেটে বিপাকে পড়েছেন যেমন অন্যদিকে আগাম আলু চাষ করে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন কৃষকেরা। দিন-রাত পরিশ্রম করে কৃষকেরা সোনালী বোরো ধান আর আলু ফলিয়েছেন। সে ফসল তুলতে গিয়ে বৃষ্টির পানি গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৃষকের সোনালী স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। গতকাল সকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ক্ষেতের কাটা-ভেজা ধানের শীষ জড়িয়ে ধরে কৃষক কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি আমন মৌসুমে ১টি পৌরসভাসহ ৯টি ইউনিয়নে ধান চাষের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছিল ১২ হাজার আট শ’ ৫০ হেক্টর। কিন্তু ফলন ভালো হলেও বৈরি আবহাওয়ার কারণে উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা কম হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষি বিভাগ। ধান কাটার ভরা মৌসুমে টানা দুইদিনের বৃষ্টিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে উপজেলার কৃষকরা।
ধান চাষীরা জানান, উৎপাদন খরচ বাদে বৃষ্টির কারণে এক বিঘা জমির ধান ঘরে তুলতে অতিরিক্ত ৪/৫ হাজার টাকা খরচ হবে। মণপ্রতি এক হাজার টাকার উপরে ধান বিক্রি করতে না পারলে কৃষকের লোকসান হবে। সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে সরকারের ন্যায্য মুল্যে ধান ক্রয়ের দাবিও করেন তারা।
আলু চাষি কামাল জানায়, এবার আমি ২ বিঘা জমিতে ৮ বস্তা আলুর বীজ লাগিয়েছি। সার, শ্রমিক খরচ ও জমি চাষ খরচ প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। দুইদিনের টানা বৃষ্টিতে আমার ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেল। আগাম আলু চাষ করে কিছুটা লোকসান ঘোচানোর স্বপ্ন দেখেছিলাম। কিন্তু সব স্বপ্ন পানিতেই ডুবে গেল। জমি থেকে আলুর বীজগুলো তুলতে না পারলে আলুগুলো সব পচে নষ্ট হয়ে যাবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুকশেদুল হক বলেন, আমরা কৃষকদের আগে থেকেই আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছি। উপজেলার বেশিরভাগ কৃষকই পশু খাদ্যের জন্য পাকা ধানের শুকনো খড়সহ ধান সংগ্রহ করে থাকেন। বৈরি আবহাওয়ার কারণে এ বছরে খড় বাদেই ধান কেটে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছি।