কিশোরগঞ্জ

নেপিয়ার ঘাস চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছে হোসেনপুরের চাষীরা

মাহফুজ হাসান, কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুরে গবাদিপশুর খাদ্য নেপিয়ার ঘাস। এ ঘাস থেকে গবাদিপশুর কাঁচা ঘাসের চাহিদা পূরণসহ ঘাস বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছে অনেকে। এই ঘাস দেখতে আখের মতো, লম্বা ৪ থেকে ১০ ফুট বা তার চেয়েও বেশি হয়। এ ঘাস দ্রুত বাড়ে, সহজে জন্মে, পুষ্টিকর, সহজপাচ্য ও খরাসহিষ্ণু। একবার রোপণ করলে ৪ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। বৃষ্টি বা বর্ষার পানি জমে থাকে না এমন জমিতে নেপিয়ার ঘাস চাষ করা হয়। সব ধরনের মাটিতে এ ঘাস রোপণ করা হয়। তবে বেলে-দোআঁশ মাটি বেশি উপযোগী।

উপজেলার নেপিয়ার ঘাস চাষি নান্দানিয়া গ্রামের আবুবক্কর সিদ্দিক ও বর্শিকুড়া গ্রামের মো: কাঞ্চন মিয়া বলেন, প্রথমে তিনি নিজের গবাদিপশুকে খাওয়ানোর জন্য ১০ কাঠা জমিতে ঘাস লাগায়। নিজের গবাদিপশুকে খাওয়ানোর পরে অতিরিক্ত ঘাস বিক্রয় করা শুরু করি এতে আমার চাষের খরচ উঠে আসে। বিষয়টি আমার কাছে লাভ জনক মনে হওয়ায় আমি নিজের জমিসহ লিজ নিয়ে ৫ বিঘা জমিতে নেপিয়ার জাতের ঘাস চাষ করেছি। এই ঘাস বিক্রয় করে আমি এখন অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হয়েছি। বর্তমানে নেপিয়ার ঘাস চাষ করে বিক্রয় করাকে পেশা হিসাবে নিয়েছি। এছাড়াও উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নে উত্তর পানান গ্রামের শরিফ আহমেদ, সিদলা ইউনিয়নের মেচেরা গ্রামের হানিফ মিয়া, শাহেদল ইউনিয়নে রহিমপুর গ্রামের শাহিনুর বাসার, সাহেবের চর গ্রামের রোমানসহ অনেকেই এখন এই ঘাস চাষ করে বিক্রয় করে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে।

নেপিয়ার ঘাস চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো: উজ্জ্বল হোসাইন বলেন, বর্ষার শুরুতে এ ঘাসের শিকড় বা চারা রোপণ করা হয়। বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাসে প্রথম বৃষ্টির পর জমিতে চারা বা শিকড় লাগালে প্রথম বছরেই ৩-৪ বার পর্যন্ত ঘাস কাটা যায়। চারা বা শিকড় লাগানোর পর যদি রোদ হয় বা মাটিতে রস কম থাকে তাহলে চারার গোড়ায় পানি দিতে হয়। এক সারি থেকে অন্য সারির দূরত্ব দুই-তিন ফুট এক চারা থেকে অন্য চারার দূরত্ব দেড় ফুট করে লাগাাতে হয়। মাটিতে রস না থাকলে চারা লাগানোর পর পানি সেচ দিতে হবে। সাধারণত প্রতি একর জমি রোপণের জন্য সাত-আট হাজার চারা বা শিকড় এর প্রয়োজন হয়। ভালো ফলন ও গাছের বৃদ্ধির জন্য সার এবং পানি প্রয়োজন। বর্ষা মৌসুমে পানির প্রয়োজন না হলেও অন্য সময়ে পানির প্রয়োজন হয়। দেড় থেকে দুই টন গোবর প্রতি একরে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে পারলে ভাল হয়। গোবর সার না দিলে পরিমান মত রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হয়। বিশেষ করে ঘাস কাটার পর বিঘাপ্রতি ২০ কেজি ইউরিয়া ১০ কেজি পটাশ প্রয়োগ করলে এই ঘাস দ্রুত বৃদ্ধি পায়।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker