গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলের মাঠে সোনালী ধানের সমারোহ। রোদ আর হিমেল বাতাসে ফসলের মাঠে মাঠে দোল খাচ্ছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন ধানের শীষ। ফসলের মাঠে সবুজ বর্ণ থেকে হলুদ বর্ণ ধারণ করতে আর মাত্র ক’দিনের মধ্যেই কৃষকেরা মাঠে ধান কেটে ঘরে ফসল তুলার উপযোগী হবে। তাই এবার কৃষকরা বুরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন। এদিকে ধান কাটার আগমুহূর্তে ধানের শীষ পরিচর্যায় ব্যাস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছেন এ বছর উপজেলায় ১০ হাজার ১০০ শ ‘৬৫ হেক্টর জমিতে বারো ধান আবাদ সম্ভাব্য ধরা হয়েছে। এছাড়া কৃষি অফিস থেকে ৪ হাজার ২’শ কৃষককে বিনামূল্যে উন্নত মানের বীজ ও সার, কীটনাশক সহায়তা ও সুবিধা, পরামর্শ কৃষকদের দেয়া হয়েছে।
উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নে ফসলে মাঠে বোরো ধানের শীষ দোল খাচ্ছে। এ বছর নতুন জাতের ধান ব্রি-৮৯, ব্রি-৯২, উফসি-২৯, জাতের ধান রোপন করা হয়েছে। এছাড়াও ব্রি-২৮, ২৯ জাতের ধান কৃষকের মাঠে দোল খাচ্ছে।
খালপাড় গ্রামের লিটন জানান, আমাদের মাঠে সব ধান ফুলে ঝারা দিয়েছে, আর মাত্র ক’দিন পরেই মাঠের অধিকাংশ ধান পাকতে শুরু করবে। এই ধানের শীষ দেখে মনে হয় এবার ফসলের বাম্পার ফলন হবে।
বামন্দহ গ্রামের জাদপ চন্দ্র সরকার বলেন,আমাদের মাঠে প্রচুর পরিমাণ ধান চাষ করা হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর বড় বড় ধানের শীষ দেখা যায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগে সমস্যা না হলে এবছর আশা করছি বাম্পার ফলন হবে।
করিম হোসেন নামের আরেক কৃষক জানান, আমি ৮ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছি। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার প্রত্যেকটি খেতে আমার প্রচুর ধানের শীষ দেখা যাচ্ছে। এবছর বাম্পার ফলনের আশা করছি আমরা।
রফিকুল ইসলাম জানান, আমার ধান অনেক ভাল হয়েছে। কিন্তু আসছে সামনে কালবৈশাখী ঝড়। এই ঝড়ে যদি কোন ক্ষতি না হয় তাহলে আমি বিঘা প্রতি ৩৫ হতে ৩৬ মণ ধান পওয়ার আশা করছি।
এছাড়া সরোজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার বড়ই বাড়ী, তাঁলতলী, বাঁশতলী দিঘীবাড়ী, খালপাড়, নামাশুলাই, মেদিয়াশুলাই, গাবতলি, মকস, পিপড়া সিট, নয়ানগর, সাকাশ্বর, ইতালি বাজার, ফুলবাড়িয়া, গাবচালা, শৈলাখালি, বোয়ালী, দেওয়ার বাজারেরসহ উপজেলার সব এলাকায় মাঠ গুলোতে একই চিত্র। বুরো ধানের আবাদ হচ্ছে এবং আর কদিন পরেই কৃষকের ধান কাটবে এবং বাম্পার ফলনের আশা করছেন স্থানীয় কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি এ বছর লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত ফসল উৎপাদন হবে। উপজেলার ১০ হাজার ১’শ ৬৫ হেক্টর জমিতে বুরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। এ বছর বড় ধরনের ঝড়, বৃষ্টি, অথবা শিলাবৃষ্টি না হলে বুরো ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া কৃষি অফিস থেকে নিয়মিত কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কাজেই কৃষক সঠিক সময় ফসল কেটে ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা করছি।