চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে ৩২ কোটি টাকার চামড়া বেচাকেনার আশা

কোরবানি পশুর লবণজাত করা চামড়া বেচাকেনা শুরু হয়েছে চট্টগ্রামের আড়তে। ইতিমধ্যেই ঢাকা ও চট্টগ্রামের ট্যানারি মালিকদের কাছে ৩০ হাজার চামড়া বিক্রি করেছেন বলে জানান আড়তদাররা। আরও কয়েকজন ট্যানারি মালিক চামড়া কেনার জন্য নগর ও বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে যাচাই-বাছাই করছেন।

বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী-আড়তদার সমবায় সমিতির সভাপতি মো: মুসলিম উদ্দিন বলেন, ‘চট্টগ্রামে প্রক্রিয়াজাত চামড়া বেচাকেনা শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে ঢাকার খোকন লেদার ও চট্টগ্রামের রিফ লেদার ৩০ হাজার চামড়া কিনেছে।’

চট্টগ্রামে লবণজাত করা পশুর চামড়া বিক্রি করে প্রায় ৩২ কোটি টাকার ব্যবসার আশা করছেন আড়তদাররা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবার ঢাকার বাইরে প্রতি বর্গফুট চামড়ার দর দিয়েছে ৫০-৫৫ টাকা। যা গত বছর ছিল ৪৫-৪৮ টাকা।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও আড়তদার সমিতির হিসাব বলছে, চলতি বছর তিন লাখ ৬০ হাজার ৯৫০টি চামড়া সংগ্রহ করা হয়েছে। এরমধ্যে গরুর চামড়া দুই লাখ ৯৭ হাজার ১৫০টি। মহিষের চামড়া ১২ হাজার দু’শ। ছাগলের চামড়া ৫১ হাজার ৬’শ ।

গতবারের চেয়ে এবার চামড়ার দর বাড়িয়েছে সরকার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেওয়া দরে প্রতিটি গরুর চামড়ার এক হাজার টাকা দরে বিক্রির আশা করছেন আড়তদাররা। ইতিমধ্যেই বিক্রিত চামড়া এই দরে বিক্রি হয়েছে বলে জানান আড়তদার সমিতির সভাপতি মুসলিম উদ্দিন। তিনি বলেন, গরুর চামড়ার চেয়ে মহিষের চামড়া সংগ্রহ কম। মহিষের চামড়া এক হাজার টাকা থেকে ১২শ টাকায় বিক্রি করা যাবে।

এবার গরুর চামড়া সংগ্রহ হয়েছে দুই লাখ ৯৭ হাজার ১৫০টি। প্রতিটি এক হাজার টাকা দরে বিক্রি হলে বিক্রয় মূল্য দাঁড়াবে ২৯ কোটি ৭১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। আর মহিষের চামড়া গড়ে ১১শ টাকা দরে বিক্রি হলে দাঁড়াবে এক কোটি ৩৪ লাখ ২০ হাজার টাকা।

গরুর চামড়া ছাড়াও এবার ছাগল ও বকরির চামড়ার দর বাড়িয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। খাসির চামড়ার দর দিয়েছে প্রতি বর্গফুট ২০-২৫ টাকা। খাসির চামড়া ১৫০ টাকা বিক্রি ধরলে বিক্রয়মূল্য দাঁড়ায় ৭৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

সেই হিসাবে চট্টগ্রামে চামড়া বিক্রি করে ৩১ কোটি ৮৩ লাখ ১০ হাজার টাকার বেচাকেনার আশা করছেন আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা।

তবে প্রান্তিক ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা জানান, সরকার চামড়ার দর বাড়ালেও আড়তদাররা পানির দরে চামড়া কিনেছেন।

১০ জন কোরবানিদাতার সঙ্গে কথা হয়েছিল প্রতিবেদকের সঙ্গে। তারা বলেন, গরু কিনেছেন এক থেকে দেড় লাখ টাকায়। চামড়া বিক্রি করেছেন ২০০-৩০০ টাকা দরে।

২০১৯ সালে চামড়ার নৈরাজ্য ঠেকাতে চামড়া সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু করেছে গাউসিয়া কমিটি। এবারও লক্ষাধিক চামড়া সংগ্রহ করেছেন বলে জানান গাউসিয়া কমিটির যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট মুছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার। তিনি বলেন, ‘মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা শাখার সংগৃহীত চামড়া আড়তদারদের কাছে ২২০-২৮০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়েছে।’

চামড়া আড়তদার সমিতির সহ-সভাপতি আবদুল কাদের বলেন, ‘একটি চামড়ায় লবণ, শ্রমিক, পরিবহন ও গুদাম খরচ মিলে ৩২০ টাকা লাগে। ঢাকা পৌঁছাতে খরচ হয় প্রায় ৫শ টাকা খরচ হয়। এছাড়া বিক্রির সময় ১৫-২০ শতাংশ চামড়া বাদ দেন ট্যানারি মালিকেরা।’ তিনি বলেন, ‘২০১৫-২০১৮ সালের প্রায় ২৫ কোটি টাকা এখনো ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে আটকে রয়েছে।

Author

দ্বারা
মো: আবদুর রহিম চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker