ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ভাদুঘর মাদরাসার প্রিন্সিপালের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান

রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভাস্থ ভাদুঘর ডি এস কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপালের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকবৃন্দ।

আজ সকাল ১১টায় ভাদুঘর মাদরাসা থেকে তারা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে মিছিল নিয়ে যায়। অবশেষে সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশ করে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি ও তার বিরুদ্ধে আনিত দূর্নীতির অভিযোগ সমূহ লিখিত আকারে প্রদান করেন। এসময় জেলা প্রশাসক মন্ত্রণালয়ের মিটিংয়ে ব্যস্ত থাকায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) এ অভিযোগটি গ্রহণ করে পর্যালোচনা করে অতি অল্প সময়ের মধ্যে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।

এবং এই মধ্যবর্তী সময়ে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য এই সপ্তাহের মধ্যে একজন জ্যৈষ্ঠ শিক্ষককে দায়িত্ব দিবেন বলেও জানান।

Image

স্মারকলিপিতে বলা হয়, প্রিন্সিপাল একরাম সাহেব দীর্ঘদিন যাবত মাদরাসায় নানান অনিয়ম ও দূর্নীতি করে আসছে। তার দূর্নীতির ফলে মাদরাসাটি আজ ধ্বংসের পথে। আমরা মানসম্মত শিক্ষার পরিবেশ ও মাদরাসার উন্নয়নের স্বার্থে দূর্নীতিবাজ এই প্রিন্সিপালের অপসারণ চাই। 

লিখিত অভিযোগপত্রে উপাধক্ষ্য নিয়োগে গড়িমসি, নিয়োগ সংক্রান্ত দূর্নীতি, স্বেচ্ছাচারীতা, দায়িত্বে অবহেলা, স্টাফ ও শিক্ষার্থীদের সাথে দূর্ব্যবহার, ভুয়া রশিদ কর্তন ও গাছ বিক্রিয়ের টাকা, চাল বিক্রয়ের টাকা, ভর্তি ফরম, সনদ, নম্বর ফর্দ, প্রশংসা পত্রের টাকা আত্মসাৎসহ শিক্ষকদেরকে রীতিমতো শিক্ষার্থীদের থেকে নিয়ম বহির্ভূত টাকা তুলতে বাধ্যকরণ সহ টাকা আত্মসাতের আরও অনেক অভিযোগ তার বিরুদ্ধে বিস্তারিতভাবে আনা হয়।

Image

উক্ত মাদরাসার শিক্ষার্থী খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, প্রিন্সিপাল একরাম হোসেন প্রভাব খাটিয়ে শিক্ষার্থীদের অর্থ আত্মসাৎ করে আসছিলেন। তিনি দীর্ঘ ১৪ বছর যাবত কোনো উপাধ্যক্ষ নিয়োগ দেননি। এ অধ্যক্ষ সরকারিভাবে পাওয়া ল্যাপটপ একজন ব্যবসায়ীর কাছে ভাড়া দিয়ে নিজে সে টাকা ভোগ করেছেন। তার দাম্ভিকতার কারণে কেউ এতদিন যাবৎ এর প্রতিবাদ করতে পারেননি। কিন্তু গত ৫ই আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর একরাম হোসেন পালিয়ে গেয়েছেন। তাকে দীর্ঘ একমাস যাবত তাকে পাওয়া যাচ্ছে না, তিনি কোথায় আছেন কেউ জানেও না।

ইয়ামিন খান নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের থেকে প্রশংসাপত্র, সনদ ও প্রবেশপত্র বাবদ নিয়ম বহির্ভূত টাকা উত্তোলন করেন প্রিন্সিপাল একরাম হোসেন। বোর্ড নির্ধারিত কেন্দ্রের ফির অতিরিক্ত টাকা উত্তোলন করেন তিনি। তিনি সুলভ মূল্যে শিক্ষা সামগ্রী ক্রয়ের একমাত্র মাধ্যম ‘সততা স্টোর’ বন্ধ করে দেন। রোবার স্কাউট ফি নিলেও টিম গঠন করেননি। এমনকি ভর্তির সময় মিলাদ বাবদ টাকা নিলেও মিলাদ অনুষ্ঠানের জন্য পুনরায় চাঁদা দিতে বাধ্য করেছেন শিক্ষার্থীদের।

Image

শান্তা আক্তার নামের ফাজিল প্রথম বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমি এ মাদরাসায় গত ৬ বছর যাবত পড়াশোনা করে আসছি। প্রিন্সিপাল একরাম হোসেন তার সামনে আমিসহ সব মেয়েদের হিজাব খুলে পড়াশোনা করতে চাপ প্রয়োগ করতেন। অথচ আমি খ্রিস্টান একটি স্কুলে পড়াশোনা করে এসেছি। সেখানে পর্দার ব্যাপারে কোনো বাধা ছিলনা। আমরা এ অধ্যক্ষের অপসারণ চাই।

উল্লেখ্য: উক্ত মাদরাসার কমিটি, এলাকাবাসী, গভর্নিং বডি, শিক্ষক- শিক্ষিকা মন্ডলী ও শিক্ষার্থীবৃন্দসহ সবাই তার অপসারণের ব্যাপারে একমত।

Author

দ্বারা
দেলোয়ার হোসাইন মাহদী (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)

মো: মেহেদী হাসান, ব্রাহ্মনবাড়িয়া প্রতিনিধি

পেশায় একজন সাংবাদিক। তিনি ৩০ জুন থেকে মিশন ৯০ নিউজে ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি হিসেবে, সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker