গত বছরের তুলনায়, চাষের দোলনায়,এ বছর পাট চাষে গর্জিয়াস,সুখের মাতম।কিশোর গন্জের বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে,সরে জমীনে,প্রত্যক্ষ দর্শনে,দেখা যায়,
গত মৌসুমে পাটের মূল্য চড়া থাকায়,এ মৌসুমে দ্বিগুন বৃদ্ধি, পাটের প্রবৃদ্ধি, চাষাবাদ বাড়ায়।
পাট আমাদের দেশের সোনালী আশঁ।পাট একটি অর্থকরী ফসল,বৈদেশিক বাজারে রয়েছে পাটের বেশ দখল।পাট রপ্তানিতে প্রচুর অর্থ জমা হয়, যা জাতীয় অর্থনীতিতে, বলিষ্ঠতার সাথে,স্বর্নোজ্জোল ভূমিকা রাখে।
সুকচান নামে জৈনেক কৃষক আমাদের জানান-
পাটের চড়া দামে আমরা খুশি।আশা করছি এ বছর,আমরা লাভবান হবো।করোনায় ক্ষতি গ্রস্ত হলেও,পাট চাষ করে মোটামোটি কিছুটা পুষেছে, এতে আমরা আনন্দিত।
ইতিহাস ঘেটে যানা যায়,
অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষের দিকে, নীলের বাজার ধ্বংস হওয়ায় বাংলাদেশের ইংরেজ কোম্পানি কর্মচারীদের বেকার হয়ে দেশে ফিরে যাওয়ার উপক্রম হয়। বিলেত থেকে তাদের মালিকদের বার্তা এলো।দেশে ফিরলে কাজের সুবিধা নেই এবং ওই দেশের নতুন কোনো রফতানির সম্ভাবনা পরীক্ষা করতে হবে। ডান্ডিতে তখন জাহাজের দড়ি প্রস্তুতের শিল্প ছিল, ফ্লেক্স ও হেম্পের প্রস্তুত ক্যাপস্ট্যানের দড়ি তারা ইউরোপে রফতানি করত।
কাঁচামাল আসত আমেরিকার প্রায় সদ্য হারানো উপনিবেশ অঞ্চল থেকে। পরে আমেরিকার গৃহযুদ্ধের ফলে সেই শিল্পে বেশি করে কাঁচামালের সংকট দেখা দেয়। বাংলায় দড়ির জন্য হেম্পের কোনো বিকল্প আঁশ পাওয়া যায় কিনা, অনুসন্ধান করতে বলা হলো তাদের।
বাংলার পল্লীতে তখন চাষীরা নিজেদের প্রয়োজনে বাড়ির আশেপাশে সামান্য পাট চাষ করতেন, তা থেকে বাড়িতেই তাঁতে কিছু চট ও গৃহস্থালির কাজের জন্য দড়ি প্রস্তুত করতেন।
দায়ে পড়ে কোম্পানির লোকেরা এ পাট কিছু তাদের পরীক্ষা খামারে (যেটাকে এখন কলকাতার বোটানিক্যাল গার্ডেন বলা হয়) যত্ন-সহকারে উৎপন্ন করে জাহাজে ১০০ মণের এক চালান ১৭৯১ সালের দিকে ডান্ডিতে পাঠায় এবং লিখে দেয়, নমুনায় দেয়া এ পাট এতদ্দেশে স্বল্প ব্যয়ে প্রচুর উৎপাদন সম্ভব। খুব চেষ্টা করুন, যাতে এটা কাঁচামাল হিসেবে স্বদেশের শিল্পে ব্যবহার করা যায়। ডান্ডিতে সেই পাট দিয়ে প্রথমে জাহাজের দড়ি তৈরির জন্যই চেষ্টা করা হয়। কিন্তু দেখা গেল হেম্প বা ফ্লেক্সের মতো পাটকে দড়ির জন্য ব্যবহার করা যাচ্ছে না— এত মজবুত হতে পারে না।
শেষে হতাশ না হয়ে তারা পাট থেকে কিছু চটের থলে তৈরি করে ইউরোপে তাদের দড়ির চালানের সঙ্গে বিনামূল্যে নমুনা হিসেবে পাঠিয়ে লিখে দেয়, এ নতুন ধরনের কাপড় সস্তায় দেয়া সম্ভব যদি চাহিদা থাকে।
এর মাধ্যমেই বাংলাদেশে প্রথম পাট শিল্পের সূচনা হয়,শুরুর দিকে নারায়ণ গন্জের শীতলক্ষ্যা নদীর তীরেই ঘরে উঠে পাট শিল্পের প্রতিষ্ঠান।
বিশ্ব বাজারে পাটের তৈরি প্রাই ২৮২ টি পন্য বহুল আলোচিত। তাছাড়া ২০২০ সালের ৬ মার্চ একটি প্রতিবেদনে প্রকাশ পায়,ফুটবল দুনিয়ার অন্যতম সেরা তারকা ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পায়ের জুতা বাংলাদেশের পাট দিয়ে তৈরি বলে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া।
রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে পাট দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানিয়ে ছিলেন।এ সময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী।
আরু জানতে পারি, বিশ্বের ১১৮ টি দেশে,বাংলাদেশের পাট পন্য রফতানি হয়।এছাড়াও
একদিকে সোনালি আঁশ, অন্যদিকে রুপালি কাঠি-দুয়ে মিলে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে পাট। পাটকাঠি থেকে উচ্চমূল্যের অ্যাকটিভেটেড চারকোল উৎপাদন করে বিদেশে রফতানি করা হচ্ছে, যা থেকে তৈরি হচ্ছে কার্বন পেপার, কম্পিউটার ও ফটোকপিয়ারের কালি, আতশবাজি ও ফেসওয়াশের উপকরণ, ওয়াটার পিউরিফিকেশন প্লান্ট, মোবাইল ফোনের ব্যাটারি ও বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী পণ্য।
এ বছর কিশোরগঞ্জের পাট চাষীদের স্বর্নালী অধ্যায় রচনা হয়েছে।তুলনামূলক ভাবে গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ জমিতে পাটচাষ পরিলক্ষিত হয়েছে।কিছু সমস্যার উদ্বেগ দেখা যাচ্ছে, কিছু এলাকায়।বন্যার পানি না আসায়,পানির অভাবে জাগ দিতে হচ্ছে পুকুর বা ডুবায়।তাও বহু দূর থেকে মাথায় বহন করে নিয়ে যেথে হচ্ছে জাগ দেয়া স্থলে।
আমরা কথা বলি একজন পাটচাষী রিপন মিয়ার সাথেঃ-
“এই বচ্ছর পাট বেশি অইচে,দামও বেশি কিন্তু পানির লাইগা জাগ দিতাম পারতাছিনা”
যানা যায়, পাটের অসম্ভব মানসম্মত ফলনে, খুশীরজোয়ার কৃষক কুলে,,
অন্য একজন পাটচাষী আঃ কাদির” মিশন ৯০ “কে বলেন -গেল সিজনের দাম দেইখায় পাট চাষে আগ্রহী অইচি।বর্তমানে পাটের বাজার মূইল্য চাইর হাজারে ছুই ছুই।