ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে মারামারি, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা ছাত্রলীগের কর্মিসভায় দুই নেতার পক্ষের অনুসারীদের মধ্যে মারামারিসহ পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তিন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শহরের বঙ্গবন্ধু স্কয়ার-সংলগ্ন সমবায় মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে। তখন বঙ্গবন্ধু স্কয়ারের ভেতরে ছাত্রলীগের বিশেষ কর্মিসভা চলছিল।

আহত শিক্ষার্থীরা হলো ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইডিয়াল হাই একাডেমির দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও কাজীপাড়ার বাসিন্দা খন্দকার বিপুলের ছেলে খন্দকার নূর, একই এলাকার শাকিল মিয়ার ছেলে মাদ্রাসাশিক্ষার্থী নীরব হোসেন ও শামসুল আলমের ছেলে আরেকটি মাদ্রাসার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদাফ হোসেন।

ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহরের বঙ্গবন্ধু স্কয়ারের জাতীয় বীর আবদুল কুদ্দুস মাখন পৌর মুক্তমঞ্চে জেলা ছাত্রলীগের কর্মিসভার আয়োজন করা হয়। সভা চলে বেলা পৌনে একটা পর্যন্ত। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি তামান্না জেসমিন ও সুরাফ মিয়া, অর্থ সম্পাদক সাকিব আল হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।  

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় কয়েকজন জানান, সভার শেষ পর্যায়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সভাস্থলের বাইরে সমবায় মার্কেটের সামনে শহরের উত্তর পৈরতলা ও কাজীপাড়া এলাকার ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখন দাঁড়ানো নিয়ে দুই এলাকার নেতা-কর্মীদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হয়। এর জেরে জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল আমীনের অনুসারীরা ঘটনাস্থলে থাকা আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মহসীন মোল্লার সমর্থকদের ওপর হামলা করেন। লাঠিসোঁটা ও দেশি অস্ত্র হাতে একদল কিশোর-যুবক মহসীনের সমর্থকদের পেটান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাঠিপেটা করে দুই পক্ষের সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। মারামারির একপর্যায়ে তিন শিক্ষার্থী মাথায় আঘাত পায়। স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক আরিফুজ্জামান হিমেল বলেন, আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে খন্দকার নূরের মাথায় পাঁচটি ও নীরবের মাথায় তিনটি সেলাই লেগেছে। সাদাফের সেলাই লাগেনি। তিনজনই শঙ্কামুক্ত। আহত শিক্ষার্থী নীরব ও সাদাফ হোসেন বলে, তারা সমবায় মার্কেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। পূর্বের বিরোধ থেকেই পৈরতলার ছেলেরা ওই হামলা করে।

জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহসীন মোল্লা বলেন, ‘ঘটনা কী ঘটেছে, আমি কিছুই জানি না। আমি সভাস্থলে ছিলাম। এখন শুনতেছি সবাই আমার নাম বলছেন। কিন্তু এসবের কিছুই আমি জানি না।’

আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল আমীন বলেন, ‘আমি সভাস্থল বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে ছিলাম। বাইরে কী হয়েছে জানি না। অনুষ্ঠান শেষে হাসপাতালে গিয়ে আহতদের চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়েছি। এখানে আমার ও মহসীন ভাইরের সমর্থকদের মধ্যে কোনো ঝামেলা হয়নি। মার্কেটের সামনে দাঁড়ানো নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি থেকে মারামারি হয়। তারা কার পক্ষের জানি না।’

জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন বলেন, সভাস্থলে কোনো সমস্যা হয়নি। সভাস্থলের বাইরে এই ঘটনা ঘটেছে। কোনো পক্ষের নেতাদের মধ্যে এই মারামারি হয়নি। এর সঙ্গে ছাত্রলীগের কোনো নেতা বা পক্ষ জড়িত না। এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা।

সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন চন্দ্র বণিক বলেন, কথা-কাটাকাটি থেকে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি শুরু হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাটিপেটা করে তাদের নিবৃত্ত করে। পুলিশের ধাওয়া খেয়ে দুই পক্ষের লোকজন ঘটনাস্থল ত্যাগ করায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।


Discover more from MIssion 90 News

Subscribe to get the latest posts to your email.

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker