টানা বর্ষণ আর ভারত থেকে অব্যাহতভাবে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সীমান্ত নদীগুলো দিয়ে নেমে প্রবল বেগে প্রবাহিত হওয়ায় উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ইতিমধ্যে ৮-১০ গ্রামের বসতবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে।
মঙ্গলবার (১৮ জুন) দুপুর ২টায় সুনামগঞ্জের ষোলগড় পয়েন্টের সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৬৯ সেন্টিমিটারের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া ছাতক পয়েন্ট সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৪৯ সেন্টিমিটারের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢলের পানি ভাটির দিকে প্রবল বেগে প্রবাহিত হওয়ায় হু হু করে বাড়ছে বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা উপজেলার ভাটি এলাকায়। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ঈদের আনন্দ ভুলে ভুক্তভোগীরা বন্যার আতঙ্কে নিজেদের ও বসতবাড়ির মালামাল রক্ষায় উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় আছে। নদীর তীরবর্তী বসতবাড়ি ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে। এ ছাড়া নিম্নাঞ্চলের বসতবাড়িসহ সব স্থাপনা পানিতে ডুবে গেছে। সড়ক পানিতে ডুবে যাওয়ায় উপজেলা ও জেলার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
জেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক তাহিরপুর-বিশ্বম্ভরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কের দুর্গাপুর ও শক্তিয়ারখলা সড়ক এবং আনোয়ারপুর সড়ক গত দুই দিন ধরে পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জেলার শহরের সঙ্গে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। নৌকায় চলাচল করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, ধর্মপাশা, মধ্যনগর উপজেলার মানুষ।
তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওর পাড়ের বাসিন্দা শামিম আহমেদ বলেন, ঢলের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা হাওরপাড়ের মানুষজন বন্যার আতঙ্কে আছি।
আরো একটু পানি বাড়লে বসতঘরে পানি প্রবেশ করবে। এ ছাড়া উপজেলার তাহিরপুর বাদাঘাট সড়কসহ প্রতিটি সড়ক পানিতে ডুবে গেছে।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মুক্তিরখলা গ্রামের বাসিন্দা জহির মিয়া বলেন, পানি বাড়ছে আর বৃষ্টিও হচ্ছে। খরচার হাওরের বড় বড় ঢেউ বাড়িতে আঘাত করছে, আরো পানি বাড়লে বাড়িতে ঢুকে যাবে। পরিবারপরিজন নিয়ে বন্যার আতঙ্কে আছি।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মফিজুর রহমান বলেন, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমার উপজেলার ২২টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৭-৮ শত মানুষ অবস্থান করছে। তাদের শুকনো খাবার, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, স্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। পানি বাড়ায় সতর্ক অবস্থানে আছি। উপজেলার সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে নজরদারি রাখা হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টির কারণে জেলার সব নদী ও হাওরের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বল্পমেয়াদি বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।
আগামী ৪৮ ঘণ্টা বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে।
বন্যার পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে সব ধরনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts to your email.