সারাদেশ

মোর প্রিয়া হবে এসো রানী দেব খোপায় বর্ষার কদম ফুল

প্যারোডি তে এক পথিক কে গাইতে শোনা গেল, মোর প্রিয়া হবে এসো রানী দেব খোপায় বর্ষার কদম ফুল। সড়কের পাশে, মেঠোপথের ধারে, বসতবাড়ির আশেপাশে, পুকুর ও দীঘির পাড়ের কদম গাছ ছেয়ে আছে মিষ্টি গন্ধেভরা তুলতুলে কদম ফুলে। এসব ফুলের মন ভোলানো সৌন্দর্যে আকৃষ্ট হচ্ছে শিশুসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। শিশুরা এসব ফুল তাদের খেলার অনুষঙ্গ হিসেবেও ব্যবহার করছে। কিশোর কিশোরীদের হাতেও শোভা পায় এই ফুল।

কিশোরীরা গাথে মালা, শোভা পায় বর্ষাদূত কদম ফুল চুলের খোপা ও বেনিতে । শিশু, কিশোর-কিশোরীরা স্বর্ণকেশী কদম নিয়ে মজেছে খেলায়। সড়ক দিয়ে যেতে যেতে কদম ফুলের গন্ধ ও সৌন্দর্য উপভোগ করছে সবাই। কদম ফুলের গন্ধে যেনো গ্রামবাংলার চিরচেনা গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। কদম ফুল শুভ্রতার প্রতিক। বর্ষার স্মারক বহন করে কদম ফুল। কদমের শুভ্ররাগে হৃদয় রাঙিয়ে নেয়ার সুযোগ সবাই পাচ্ছে। তাইতো বর্ষায় গাছে গাছে ঘ্রাণ ছড়াচ্ছে কদম ফুল। এই জন্য কদম ফুল কে বর্ষার দূত বলা হয়। কদম ফুল সবুজ পাতার লাল- হলুদের মিশ্রনের মিষ্টি ঘ্রাণ সকল কে মুগ্ধ করে। প্রিয়জনের উপহার হিসেবে প্রেমিক প্রেমিকার পছন্দের তালিকায় কদম ফুল শীর্ষ স্থান দখল করে।

বর্ষাকালে কদম গাছের তলায় বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারা ও খেলাধূলা করে সময় কাটাতে খুব মজা। আলস্য জীবনের ইতি টানতে সাহায্য করে কদম ফুল। কদম ফুল কে ফুল বলা হলেও এটি ফুল নয়। এটি হচ্ছে অসংখ্য ফুলের সমষ্টি বা গুচ্ছ। এটি পথচারীদের মুগ্ধ করে। এই কদম ফুল গাছ গ্রামবাংলার পথের পাশে নদীর ধারে বেড়ে ওঠে। মন ভোলানো সৌন্দর্যের বর্ষারদূত কদম ফুল। চকচকে উজ্জ্বল সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে ফুটে থাকা কদম ফুলের সৌরভ নেয় রঙিন প্রজাপতিও। কদমফুলে রঙিন প্রজাপতির ছুটাছুটি যেন প্রকৃতিতে এক ভিন্ন মাত্রা যোগ হয়েছে। সেইসঙ্গে চিরচেনা মিষ্টি একটা গন্ধে মেতে উঠেছে গ্রামীণ সবুজ শ্যামল প্রকৃতিও। চিরচেনা কদমফুল দিন দিন প্রকৃতি থেকে যেন হারিয়ে যাচ্ছে। শহর কিংবা গ্রামের সর্বত্রই বর্ষার আগমনীতে নিজেদের মেলে ধরতো আপন মহিমায় কদম ফুল। কিন্তু কদম গাছ এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। কদম এখন যেন একটি দুর্লভ ফুলের নাম। কদমের হলুদ রঙে হৃদয় রাঙিয়ে নেয়ার সুযোগ এখন শহুরে লোকের কমই আছে। শুধু শহর নয় গ্রাম থেকেও হারিয়ে যাচ্ছে কদম।

Image

কদম ফুলকে বলা হয়ে থাকে বর্ষার বিশ্বস্ত দূত। কাঠফাঁটা রোদে মানুষের হাঁসফাঁস করা গরমে অঝোর ধারায় বৃষ্টি-বর্ষণের জন্য প্রতীক্ষা বাসা বাঁধে। বর্ষা মানেই গুচ্ছ গুচ্ছ কদমফুলের উপস্থিতি। বর্ষা মানে কদমফুলের মতই তুলতুলে নরম বৃষ্টির রিনিঝিনি শব্দের ধ্বনি। কদমফুলে গাছ নরম বলে এর কাঠ দিয়ে আসবাবপত্র তৈরি করা যায় না। কাঠ দিয়ে দেয়াশলাই ও বাক্সপেটরা তৈরি হয়ে থাকে। কদম ফুলের আরেকটি নাম হচ্ছে নীপ। কদম ফুলের সৌন্দয্যর মতো আরও কিছু চমতকার নাম রয়েছে। বৃত্তপুষ্প, সর্ষপ, ললনাপ্রিয়, সুরভী, মেঘাগমপ্রিয়, মন্জকেশিনী, কর্ণপুলক, পুলকি এসবও কদম ফুলের নাম। কদম ফুলের আধিপত্য রয়েছে প্রাচিন সাহিত্যর বিশাল অংশজুড়ে। ষড়ঋতু এর দেশ বাংলাদেশ। ছয় ঋতুর প্রত্যেকটি আলাদা। চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কারণে ব্যতিক্রম বর্ষা ঋতু। প্রেমময়, কাব্যময়, বর্ষা ঋতু। ভালবাসার সাধ জাগে বর্ষার প্রবল নির্জনে, মেঘের গর্জনে। প্রেমিকা গেয়ে উঠে ‘প্রাণ সখিরে ঐ শোন কদম্বতলে বংশী বাজায় কে’।

Author


Discover more from MIssion 90 News

Subscribe to get the latest posts to your email.

দ্বারা
শহীদুল ইসলাম শরীফ

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker