গভীর নিম্নচাপ উপকূল অতিক্রম করছে, ১৬ জেলায় জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা
বঙ্গোপসাগরের গভীর নিম্নচাপ জলোচ্ছ্বাস শঙ্কা নিয়ে উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে। ১৬ জেলায় ২-৪ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে, ৩ নম্বর সংকেত জারি।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সন্ধ্যা নাগাদ এটি উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও উপকূলীয় এলাকায় দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে এবং অমাবস্যা ও নিম্নচাপের প্রভাবে ১৬টি উপকূলীয় জেলায় জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ৩ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আজ বিকেলে জানানো হয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে সাগরদ্বীপ ও খেপুপাড়ার নিকট দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে। আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে আজ সন্ধ্যা নাগাদ উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে এবং ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে যেতে পারে। এর ফলে প্রাথমিকভাবে সারাদেশে চলমান বৃষ্টির প্রবণতা আরও বাড়তে পারে।
সতর্ক সংকেত ও নির্দেশনা:
- বায়ুপ্রবাহ: গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে দমকা/ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
- বাতাসের গতিবেগ: নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
- সাগরের অবস্থা: গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।
- বন্দর সংকেত: চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
- নৌযান: উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরসমূহের ওপর দিয়ে দমকা/ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়েছে, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বেশ উত্তাল রয়েছে। এ অবস্থায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়াও, উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
অমাবস্যা এবং গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় ১৬টি জেলায় জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা রয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, হাতিয়া, সন্দ্বীপ, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২-৪ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে সম্ভাব্য জলোচ্ছ্বাস মোকাবিলায় প্রস্তুতি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।