নদী মাতৃক দেশ আমাদের বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বুক চিড়ে বয়ে চলেছে অসংখ্য নদ নদী। অন্যতম নদীগুলির মধ্যে ব্রহ্মপুত্র একটি। কখনো শান্ত, কখনো ভয়ংকর সর্বানাশা রুপ নিয়ে আবহমান কাল থেকে বাংলাদেশ নামক ভূ-খন্ডে জেগে আছে ব্রম্মপুত্রের জলরাশি। উক্ত জলরাশীর নেপথ্যে বুকটান বিকশিত বিচরণ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।
চির চেনা বাক্য “মাছে ভাতে বাঙ্গালী ” আমরা। তাই মাছ খাবার মেনুতে আমাদের প্রধান প্রেম। জলরাশীর বুক থেকে তুলে এনে মনুষ্য পেটে যায়গা করে দিতে যুগে যুগে আবিষ্কার হয়েছে মাছ ধরার বহুল আলোচিত সরঞ্জামাদী।
কিশোরগন্জ জেলার হোসেনপুরে দেখা মিলল, তেমনি অভিনব কায়দায় মাছ ধরার শৈল্পিক কৌশল। ছোট ডিঙ্গি নৌকার (১৪-১৮ ফুট দৈর্ঘ্য ৩ ফুট প্রস্ত) এক পাশ অথবা উভয় পাশেই সাদা রঙ্গের টিনের শীট ( ১৮” ইঞ্চি ব্যাসযুক্ত) লাগিয়ে। বড় পাথরের ওজনে নৌকা এক পাশে হেলিয়ে মাছ শিকারী আপন মনে বৈঠা চালায়।
জানা যায়- ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল থেকে গাজীরপুর জেলার শ্রীপুর অবধি মাছ ধরার এ কৌশলটি “চেলার নৌকা” হিসেবে পরিচিত।
শফিকুল ইসলাম( ৫৫) জৈনেক মাছ শিকারী বলেন- ”এই পদ্ধতির মইধ্যমে চেলা মাছ মারি দেইখায় চেলার নৌকা ডাহি “
সাদ্দাম হোসাইন(২৫) একজন শিকারী আমাদের জানান- “আমরা বচ্ছরের ৬ মাস চেলার নাউ দিয়া মাছ মারি। ভালা দামের মাছ পায় “
সূত্রমতে জানতে পারি- চেলার নৌকায় সাধারনত চড়া মূল্যের মাছ ধরা পড়ে, নৌকার দুপাশে স্বচ্ছ সাদা দেখে মাছ নির্ধিদায় নৌকায় পড়ে।
আপন মনে গুন গুনিয়ে ভাটিয়ালী গান গেয়ে বৈঠা দিয়ে নদের বুকে মৃদু আঘাত হানছে রাতভর কোন কোন শিকারী। এ যেন সত্যিই বাংলার ঐশ্বর্যশীলা আরেক বৈচিত্র্যময় রুপ। মন ছুয়ে, নুয়ে পড়ে প্রীতির শুভ্র আমেজে।
শুধু চেলা নয় অন্যান্য প্রজাতির মাছের দেখাও মিলে চেলার নৌকায়। তবে নদীর সব রকম মাছই সুস্বাদু ও পুষ্টি গুন সম্পন্ন।
মাছ আড়ৎ এর সুত্র অনুযায়ী জানা যায়- প্রতিকেজি চেলা মাছ সিজনোযায়ী ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা হয়ে থাকে। একজন শিকারী প্রতি রাতে ১০০০ থেকে ৫০০০ টাকার মাছ ধরতে পারে।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts sent to your email.