বিএনপি

নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান ফখরুলের

সুষ্ঠ নির্বাচন পরিচালনার জন্য পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এই আহ্বান করেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনায় জনগণের ভোটে সরকার নির্বাচিত হবে। এটাই হবে বাংলাদেশের ৭১ সালের চেতনাকে বাস্তবায়ন করা।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে আনা তখনই সম্ভব হবে যখন একটি গণতান্ত্রিক সরকার হবে। মানুষের নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য নিশ্চিত করা সম্ভব হবে তখনই যখন একটা গণতান্ত্রিক সরকার আসবে। আর সেই সরকার হবে জনগণের প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে।’

তিনি বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির একটিই মাত্র কারণ, সেটি হচ্ছে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের দুর্নীতি। সেই সাথে আওয়ামী লীগ মন্ত্রী-এমপিদের অদক্ষতা।’

ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এ দেশে কল্যাণকর যা কিছু হয়েছে সবকিছু ছাত্রদের হাত ধরে এসেছে। আবার জেগে উঠতে হবে। এই ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আসুন আমরা সেই লক্ষ্যে এগিয়ে চলি।’

তিনি বলেন, ‘আজকের দুর্ভাগ্য আমাদের যারা এই দেশ স্বাধীন করেছিলাম। একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র তৈরি করার জন্য আমরা স্বাধীনতার যুদ্ধ করেছিলাম। আমরা চেয়েছিলাম এখানে সব মানুষ মোটা কাপড় পড়বে, মোটা ভাত খেয়ে বেঁচে থাকবে, শান্তিতে থাকবে, নিরাপদে থাকবে। আওয়ামী লীগ সরকার যতবার ক্ষমতায় এসেছে তারা মানুষের সব স্বপ্নকে ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘স্বৈরশাসকরা অনেক সময় ভালোভাবে দেশ চালায়। আইয়ুব সরকারও চালিয়েছিল। কিন্তু এই সরকার দেশটাও চালাতে পারে না। মানুষের খাবার দিতে পারে না, মানুষের জীবনের নিরাপত্তা দিতে পারে না। কর্মসংস্থান নেই, তাই বেকার ছেলেদের চাকরি দিতে পারে না।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেশের গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিনা কারণে আটক করে রাখা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে। আমাদের ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা, কথা বললেই এই ছাত্রদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়। ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। আমরা যখন দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতি প্রতিবাদে সারাদেশে আন্দোলন শুরু করেছি তখন তাদের টনক নড়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘ভয়াবহ এই সরকার যারা বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে তারা টিকে আছে। তাদেরকে হঠাতে হবে। গভীর চক্রান্ত রয়েছে, সে চক্রান্ত হচ্ছে এদেশের মানুষকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত রেখে তারা একটা রাজতন্ত্র চালাবে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করেছিলাম একটা মুক্ত সমাজ এর জন্য একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য। সেই মুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে হলে আবার সেই ১৯৭১ সালের মতো ঐক্যবদ্ধ হয়ে, প্রয়োজনে আরেকটা মুক্তি যুদ্ধের মতো এই দেশকে রক্ষা করতে হবে। জনগণকে মুক্ত করতে হবে। আমাদের এই যুদ্ধ শুধু বিএনপিকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসানোর জন্য নয়, এই যুদ্ধ আমাদের গণতন্ত্রকে ফিরে পাওয়ার জন্য।’

ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলের সঞ্চালনায় এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের সিনিয়র সহ সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবন, সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক আমিনুর রহমান আমিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।

Author


Discover more from MIssion 90 News

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker