খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের ওপর হামলার ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও শিবিরকর্মীদের দায়ী করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের গেমস রুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি জানান ছাত্রদলের নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘গতকালের সহিংসতায় জড়িত কতিপয় স্থানীয় দলীয় কর্মীকে ইতিমধ্যেই বহিষ্কার করা হয়েছে বলে আমরা দেখেছি।
তবে তাদের কেউই ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত নন এবং ছাত্রদলের ইন্ধনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানোর কোনো কারণও তাদের নেই।’
ছবি ও ভিডিও প্রমাণের ভিত্তিতে আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি গতকালকের ঘটনার সূত্রপাত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে একটি মিছিল থেকে ছাত্রদল সমর্থকের ওপর অতর্কিত হামলার মধ্য দিয়ে।
ঘটনার সূত্রপাত বৈষম্যবিরোধীর হাত ধরে উল্লেখ করে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গতকালকের এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সূত্রপাত হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে একটি মিছিল থেকে কতিপয় ছাত্রদল সমর্থকের ওপর অতর্কিত হামলার মধ্য দিয়ে।
সেই মিছিল থেকে ধারণকৃত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, যখন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা ক্লাস শেষে মিছিলের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন মিছিলটির আহ্বায়ক মো. ওমর ফারুক (২০১৯-২০ সেশন)-এর প্রত্যক্ষ উসকানিতে মিছিলে হামলা করা হয়।
হামলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ওমর ফারুকের নেতৃত্বে হয়েছে উল্লেখ করে নেতারা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটির নেতা এবং সেই কমিটির আহ্বায়ক মো. ওমর ফারুকই ছাত্রদলের সেই তিনজন সমর্থককে ‘ধর! ধর’ বলে প্রথম তেড়ে যান।
কুয়েটের ঘটনা নিয়ে ছাত্রদলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ ছড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে বলা হয়, কুয়েটে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ঘটেছে সেটি নিয়ে অনলাইনে ও অফলাইনে সত্য ঘটনাকে আড়াল করে অপপ্রচারের মাধ্যমে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নামে যে মিথ্যা অপবাদ চারিদিকে ছড়ানো হচ্ছে, তার প্রেক্ষিতে আমাদের সংগঠনের নৈতিক ও রাজনৈতিক অবস্থান ব্যাখ্যা করার বিষয়টি অতি জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শিবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ফ্যাসিবাদী কর্তৃত্ববাদ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার অপচেষ্টায় লিপ্ত উল্লেখ করে বলা হয়, যখন বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের আদর্শে অসংখ্য নবীন শিক্ষার্থী আকৃষ্ট হচ্ছে ও রাজনৈতিকভাবে সম্পৃক্ত হচ্ছে, ঠিক তখনই আন্ডারগ্রাউন্ড অপরাজনীতির অত্যুৎসাহী চর্চার মাধ্যমে প্রতিঘাতমূলক নানা গুপ্ত কার্যক্রম ও অপপ্রচারকে পুঁজি করে উসকানি ও সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে কিছু গুপ্ত সংগঠন ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ফ্যাসিবাদী সংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা।
নিষিদ্ধ ঘোষিত ফ্যাসিবাদী সংগঠন ছাত্রলীগ যেমন অতীতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নামকে ভাঙিয়ে নিজেদের নানা অপকর্মের সাফাই দিত, ঠিক সেভাবেই ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে গুপ্ত সংগঠন শিবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের নামকে কলুষিত করছে এবং এই নাম ব্যবহারের মাধ্যমে ক্যাম্পাসগুলোতে ভিন্ন রূপে অগণতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদী কর্তৃত্ববাদ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার অপচেষ্টায় লিপ্ত আছে।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস, সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপনসহ কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।