আওয়ামী লীগ থেকে সাবধান থাকার আহবান জানিয়ে জামায়াত আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, তারা ইসলামী চাদর গায়ে দিয়ে নতুন রূপে আবির্ভুত হয়েছে। হাতে নাতে ধরা পড়েছে। ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতারা বিশেষ একটি ইসলামী সংগঠনের ব্যানারে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উস্কে দিয়ে অশান্তি সৃষ্টি করতে চাচ্ছে।
তারা বাংলাদেশকে দুনিয়ার সামনে একটি জঙ্গি, চরমপন্থী দেশ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিতে চাচ্ছে। তবে জাতি সম্মিলতিভাবে তাদের এ অপচেষ্টা ব্যর্থ করে দিবে।
১৫/১০/২৪ ইং রোজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ট্যাংকেরপাড়স্থ পৌর মুক্ত মঞ্চে আয়োজিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার কর্মী সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ডা: শফিকুর রহমান বলেন, আমরা এমন একটি সমাজ গঠন করতে চাই যেখানে বিচারপ্রার্থীকে বিভিন্ন ধরনের হয়রানি শিকার হতে হবে না। কোনো বিচারক তার আসনে বসে আল্লাহকে ছাড়া কোনো রাষ্ট্রশক্তিকে পরোয়া করবে না। রাষ্ট্রের আইন এবং বিবেক শক্তি দিয়ে বিচার কাজ পরিচালনা করবে। আমরা শুনতে চাই না বিচারকের আসনে বসে বিচারকরা ঘুস খায়।
তিনি বলেন, মিডিয়া বের করে নিয়ে আসে উনি অমুক জেলার ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন, তার পাঁচটি গাড়ি রয়েছে, ১০টি বাড়ি রয়েছে। এসব কলঙ্কজনক কথা বিচারকদের ব্যাপারে শুনতে চাই না। আমরা এমন একটি বিচার ব্যবস্থা চাই, যে ব্যবস্থা উঁচু-নিচু কাউকে ভাববে না। বিচারপ্রার্থীকে বিচার প্রার্থী হিসেবে দেখবে। কোনো বিচারপ্রার্থী যদি মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে হাজির হয়, তাহলে মিথ্যার অভিযোগের দণ্ডও তাকে পেতে হবে। আবার যদি কেউ সঠিক অভিযোগ নিয়ে আসে তাহলে ন্যায় বিচার থেকে যেন বঞ্চিত না হয়।
তিনি আরও বলেন, পৃথিবীর অন্য ১০টি দেশ যেমন মর্যাদার সঙ্গে মাথা উঁচু করে বিশ্বের বুকে দাঁড়ায়, বাংলাদেশও ইনশাআল্লাহ তার শির উঁচু করে দাঁড়াবে। বিদেশে আমাদের বন্ধু থাকবে কিন্তু কোনো প্রভু মেনে নেব না। কেউ আমাদের সঙ্গে প্রভুত্ব দেখাতে আসলে জাতির কাছে তার সঠিক জবাব বুঝিয়ে দেবেন।
এসময় নিজ দলের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় নির্যাতিত দলের নাম জামায়াতে ইসলামী। অবস্থার পরিবর্তনের পর সবাইকে ধৈর্য্য ধরতে বলেছি। আমাদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে সারাদেশের বাংলাদেশের কোথাও কোনো অভিযোগ নেই। কারো কাছে গিয়ে চাঁদা দাবি করেনি, রাস্তা-ফুটপাত দখল করেনি। কেউ এটা বলতে পারবে না। এটাই দেশপ্রেমিকের লক্ষণ।
তিনি বলেন, প্রহসনের বিচার দিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীদেরকে খুন করা হয়েছে, ফাঁসির কাষ্টে ঝুলানো হয়েছে। জেলে রেখে ধুঁকে ধুঁকে মারা হয়েছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের আবিষ্কার আয়না ঘর। অনেকের খবর নেই। তার মানে তারা মারা গেছেন। তারা সমস্ত বাংলাদেশে আমাদের অফিস সিলগালা করে রাখে। আমাদের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। প্রতীক কেড়ে নেওয়া হয়েছে। জনগণকে ধোঁকা দিতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এর প্রতিশোধ জামায়াত নিবে না। তবে আমরা হত্যাকারিদের বিচার চাই। হত্যাকারিদের শাস্তি পেতেই হবে।
উক্ত সভাটি সকাল ৯টায় জামায়াতের জেলা সেক্রেটারি মুবারক হোসেনের সঞ্চালনায় ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জামায়াতের আমির গোলাম ফারুকের সভাপতিত্বে শুরু হলে এতে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাসুম ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে সূরার সদস্য ও কুমিল্লা নোয়াখালী অঞ্চলের টিম সদস্য আব্দুস সাত্তার।
এসময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সাবেক আমির কাজী নজরুল ইসলাম খাদেম, সৈয়দ গোলাম সারোয়ার, সাবেক নায়েবে আমির কাজী মো. ইয়াকুব আলী, বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম সহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts sent to your email.