রাজনীতি

দেশের শাসন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে: কাদের সিদ্দিকী

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম বলেছেন, যে দেশে পোষাকপড়া একজন সেনা কর্মকর্তাকে ডাকাতদল এভাবে হামলা চালিয়ে হত্যা করতে পারে তাহলে বুঝতে হবে- দেশে আইনশৃঙ্খলা বলতে অথবা দেশে শাসন ব্যবস্থা বলতে কোনোকিছু নেই। এ দেশের শাসন ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। মঙ্গলবার(১ অক্টোবর) দুপুরে সেনা কর্মকর্তা নিহত তানজিম সারোয়ার নির্জনের টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করের বেতকার বাসায় তার স্বজনদের সাথে দেখা করে সমবেদনা জানানোর পর সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, পিতার কাঁধে সন্তানের লাশ হিমালয়ের চাইতে ভারি। দেলোয়ার সেই ভার বহন করছে- তাকে ও তার পারিবারকে সান্ত¡না দিতে এসেছি। জন্মের পর মানুষের মৃত্যু অবধারিত। কিন্তু এ রকম মৃত্যু কারো কাম্য হতে পারেনা। অনেকে বলে বিগত সরকার আওয়ামীলীগের। আমি বলবো না, বিগত ১৫-১৬ বছর এদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশটা ভালো চলে নাই। বিগত সরকার আওয়ামী লীগের ছিলনা, মানুষের সরকারও ছিলনা- ছিল শেখ হাসিনা সরকারের। এ দেশে যত অপরাধ হয়েছে তার ৯০ ভাগ শেখ হাসিনা নিজে করেছেন আর ১০ ভাগ অপরাধ অন্যরা বাধ্য হয়ে করেছেন।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া ইউনিয়নের করের বেতকা গ্রামে নিহত লেফট্যানেন্ট তানজিমের পৈতিক বাড়ির উঠানে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের আরও বলেন, দেশটা কেমন জানি হয়েছে গেছে। মানবিক মূল্যবোধ একেবারে ধ্বংস হয়ে গেছে। একটা সেনাবাহানীর গায়ে ডাকাত-লস্কর-চোর আঘাত হানতে পারে তাহলে বুঝতে হবে সমাজে আইন-কানুন বলতে কিছু নাই। আমি এটাকে কোন গুরুত্ব দিতাম না। যদি একটা সাধারণ মানুষ হতো তার পিছনে ছোরা মারছে, চাকু মারছে বা দা দিয়ে আঘাত করেছে। কিন্তু সেনাবাহিনীর পোশাক পড়া একজন মানুষের গায়ে দুস্কৃতিকারীরা যখন আঘাত হানতে পারে বা সাহস পায় তখন বুঝতে হবে আইনশৃঙ্খলা বলে অথবা দেশের শাসন ব্যবস্থার প্রতি মানুষের যে একটা শ্রদ্ধা ভালোবাসা, দুষ্ট লোকের যে ভয় থাকে তা কিছুই নেই।

এক প্রশ্নের জবাবে কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমি রাজনীতিকে ইবাদতের মতো মনেকরি। রাজনীতি করে আমি প্রচুর সম্মান পেয়েছি। প্রচুর অসম্মানিতও হয়েছি। গালাগালিও শুনেছি। এতো দিন বেঁচে না থাকলে আমি গালাগালি শুনতাম না। আমি যদি ‘৭১ এর যুদ্ধ করতে না পারতাম যারা গালাগালি করেন তাদের অধিকাংশদের জন্ম হয়তো পাকিস্তানের জারজ হিসেবে হতে পারতো। আমি আজকে একজন কাতর বাবা-মা-বোন তাদের পাশে শুধু আল্লাহ্র কাছে দোয়া করবার জন্য এসেছি। অন্য কোন দিন আপনারা আমাকে ধরবেন তত্ত¡বাধয়ক সরকার কত দিন থাকবে, কতদিন থাকা দরকার, মানুষের চাহিদা কি? আমি অকপটে বলবো আমি কোন কথা দ্বিধা করে কথা বলার চেষ্টা করি না।

তিনি আরও বলেন, ঘুণে ধরা সমাজটাকে বদলাতে হবে। অল্প কদিনের মধ্যে বিরাট পরিবর্তন হয়েছে, এটাকে বিপ্লব বলা চলে- মহাবিপ্লব বলা যায়। এই বিপ্লব যদি ব্যর্থ হয় তাহলে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য অন্ধকার অপেক্ষা করছে। সেই জন্যে বৈষম্য বিরোধী জনতার আন্দোলনের সফলতা ধরে রাখতে হবে।

এসময় কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে ছিলেন।

Author

আব্দুস সাত্তার, বিশেষ প্রতিনিধি

নাম আব্দুস সাত্তার। তিনি পেশায় একজন সাংবাদিক। তিনি মিশন নাইনটি নিউজের একজন বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে নিযুক্ত আছেন।

সম্পর্কিত সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker