জােটে যদি মোটে একটি পয়সা
ফুল সম্পর্কেও রাসূল (সা.) থেকে হাদিস বর্ণিত হয়েছে ‘কাউকে যদি ফুল পেশ করা হয় তাহলে ফিরিয়ে দিও না। কারণ ফুল বহন করতে সহজ এবং এতে সুঘ্রাণ রয়েছে, (সহিহ মুসলিম, হাদিস ২২৫৩)।
মানুষের বেঁচে থাকার জন্য শারীরিক সুস্থতা অপরিহার্য। কিন্তু কেবল শরীর সুস্থ রাখলেই হবে না সেই সঙ্গে মনও সুস্থ রাখা প্রয়োজন। আর মনকে সুস্থ রাখে দরকার সৌন্দর্যের সাধনা।
ঘরে ফুল থাকলে তা যে কেবল নান্দনিক আবেদন বাড়ায়, সেটা নয়। এর চেয়ে বড় কিছু করে। অনেক প্রাচীন রীতি বদলে গেছে আধুনিক সময়ে। কিন্তু ফুল দিয়ে প্রেম নিবেদনের পুরোনো সেই রীতি এখনো বদলে যায়নি। ফুল দিয়ে মালা গেঁথে পরা বা খোঁপায় ফুল গুঁজে দেওয়া নারী-পুরুষের সম্পর্কে আবেগ আনে ঘনিষ্ঠ হওয়ার।
মানুষ সপ্তাহে একবার মানসিক চাপ অনুভব করে ৬৮ শতাংশ আর এক দিন পর পর অনুভব করে। মানসিক চাপ বেশি হয় নারীদের। অনেকে সেই চাপ দিনে কয়েক বারও অনুভব করতে পারে ৩২ শতাংশ যা একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে। গবেষকেরা ১৮ থেকে ৬০ বছরের ১৪০ জন নারীর ওপর একটি পরীক্ষা চালান। এই পরীক্ষায় কিছু নারীকে দেওয়া হয় আকর্ষণীয় মোমবাতি, কিছু নারীকে দেওয়া হয় তাজা ফুল।
পরীক্ষার পর দেখা যায়, অন্যদের চেয়ে যাঁরা ফুল পেয়েছিলেন, তাঁদের মানসিক চাপ কমেছে অনেক বেশি। মন মেজাজ হয়েছে চনমনে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, ফুলের সংস্পর্শে এলে প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগ ঘটে। তাতে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে মনে। শীত মৌসুমের কয়েক টি ফুল
যেমন সূর্যমুখী: শীতকালীন ফুল। এটি দেখতে সূর্যের মতো। সূর্যের দিকে মুখ করে থাকার জন্য এর নাম সূর্যমুখী। এর বীজ হাঁস, মুরগী খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করা হয়। পৃথিবী বিভিন্ন দেশে এর ব্যাপক চাষ হয়। এই তেল অন্যান্য রান্নার তেলের তুলনায় ভালো। এই গাছ ৩০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে।
চন্দ্রমল্লিকা: ফুল শীতকালে ফোটে এবং বিভিন্ন রঙের হতে পারে। এটি উদ্যান এবং ঘরের শোভা বাড়ায়। চন্দ্রমল্লিকা ফুলের আদি নিবাস এশিয়া ও ইউরোপে। অনেক রঙের হতে পারে যেমন সাদা, হলুদ, গোলাপি। চন্দ্রমল্লিকার বৈশিষ্ট্য হলো এর পাপড়িগুলো বেশ ঘন এবং দীর্ঘস্থায়ী। এই ফুল উদ্যানের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এবং পূজায় এর ব্যবহার প্রচলিত।
এর সুগন্ধ মনোমুগ্ধকর এবং আকর্ষণীয়। সহজ পরিচর্যায় এটি বাড়ির বাগানেও ফোটানো যায়। চন্দ্র মল্লিকা, প্রায়ই “মম” হিসাবে উল্লেখ করা হয় শুধু সাধারণ ফুল নয়; তারা তাদের প্রাণবন্ত রং, জটিল পাপড়ি এবং সমৃদ্ধ প্রতীকের জন্য সম্মানিত।
রজনিগন্ধা: যা ‘নিশিগন্ধা’ ও ‘তরোয়াল লিলি’ নামেও পরিচিত। এটি একটি ভেষজ বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ যার ডাঁটার দৈর্ঘ্য ৭৫-১০০ সেমি হয়ে থাকে। এই ডাঁটার চারিপাশে সাদা রঙের ১০-২০ টি করে ফানেল আকৃতির ফুল বহন করে। এই ফুল দিয়ে নানা ঢঙের ফুলের তোড়া বানানো হয় এর মনোমুগ্ধকর আকৃতি এবং মিষ্টি সুগন্ধের জন্যে। আলগা ফুলগুলো বেণি তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়। রজনিগন্ধা টব এবং বাগানে বেড়ে ওঠার জন্য উপযুক্ত এবং এর থেকে ভাল সুগন্ধী তেল উত্তোলন করা যায়।
গাঁদা ফুল: নানাবিধ উৎসব, অনুষ্ঠান ও মালা তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।বাংলাদেশে গাঁদা ফুল খুবই জনপ্রিয়। এর চাষ সহজ। এ ফুল উদ্যানে, পার্কে, টবে বারান্দায় চাষ করা যায়। ফুলটি নানাবিধ উৎসব, অনুষ্ঠান, গৃহসজ্জা, মালা তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। ফুলটির রং, গঠন বৈচিত্র্য ও কোমলতা সকল শ্রেণির মানুষকে আকৃষ্ট করে। গাঁদা ফুলের পাতার রস শরীরের ক্ষত স্থানে লাগালে রক্ত পড়া বন্ধ হয়