২০১৮ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘ক্ষমতার অপব্যবহার, অপরাধমূলক অসদাচরণ, জাল-জালিয়াতি, দিনের ভোট রাতে করা এবং আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে’ সংসদ সদস্য নির্বাচনের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (২২ জানুয়ারি) কমিশনের এ সিদ্ধান্তের কথা সাংবাদিকদের জানান দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর ওই নির্বাচনে জিতে টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করে শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ একাই পায় ২৫৭টি আসন। দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন বলেন, মূলত নির্বাচন কার্যক্রম পরিচালনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করা হবে।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন অনিয়ম যেমন, দিনের ভোট রাতে করা, ব্যালট জালিয়াতি, কিছু কিছু কেন্দ্রে ৯০ শতাংশের বেশি কাউন্ট দেখানো, ব্যাপক আর্থিক লেনদেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রার্থীকে জেতানো ইত্যাদি অভিযোগ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে এবং দুদকেও কিছু অভিযোগ জমা হয়েছে।
অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় প্রতিটি মহানগর, জেলা, বিভাগ, উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে সরকারের সে সময়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগসাজশের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযুক্ত কর্মকর্তার মধ্যে রয়েছেন পুলিশের তৎকালীন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) জাভেদ পাটোয়ারী, শহিদুল হক, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া, সাবেক র্যাবপ্রধান ড. বেনজির আহমেদ, সাবেক প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা তারেক আহমেদ সিদ্দিকি, তৎকালীন জনপ্রশাসন বিষয়ক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, জেলা প্রশাসক, জেলা রিটানিং কর্মকর্তা, বিভাগীয় কমিশনার, রেঞ্জ ডিইজি, পুলিশ সুপার, থানার ওসি, জেলা/উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও প্রিসাইডিং অফিসার।
দুদক মহাপরিচালক আরো বলেন, অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য পাঁচ সদস্যের টিম গঠন করা হয়েছে। তারা অভিযোগের বিষয়ে বিভিন্ন ভিডিও, দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন, নির্বাচনের ফলাফল শিট পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রতিবেদন দাখিল করব।