ইতিহাস বদলে দেওয়া সেই প্রশ্ন
ছাত্র ও গণ–আন্দোলনের মুখে পরাজিত শাসকের মতই পালিয়ে গেলেন শেখ হাসিনা। সাড়ে ১৫ বছর দেশ শাসন করার পরেও তাকে এভাবে বিদায় নিতে হলো।সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ৩৬ দিন ধরে শিক্ষার্থীদের যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তা সরকার পতনের আন্দোলনে রূপান্তরিত হয়।
কোটা আন্দোলনের সময়ে পতিত সরকার প্রধান শেখ হাসিনার সর্বশেষ বিদেশ সফর ছিল চীনে, যেখানে তিনি সফর সংক্ষিপ্ত করে এক দিন আগেই দেশে ফিরে আসেন। এই বিষয়ে দেশে নানা আলোচনা চলছিল। এরপর, রীতি অনুযায়ী, শেখ হাসিনা দেশে ফিরে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। সেই সম্মেলনে এটিএন নিউজের সাংবাদিক প্রভাষ আমিনের একটি প্রশংসাসূচক প্রশ্নের সূত্র ধরে, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা যে মন্তব্যটি করেন (রাজাকার), তা সারা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের ক্ষুব্ধ করে তোলে।
এর পর, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন রাতের মধ্যে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়ে, তবে সরকার পক্ষ থেকে এই আন্দোলন প্রশমিত করার পরিবর্তে, বিভিন্ন মন্ত্রী ও ছাত্রলীগ নেতাদের মন্তব্যের মাধ্যমে তা আরও উস্কে দেওয়া হয়। কোটা ইস্যু যখন প্রায় সমাধান হয়ে যাচ্ছিল, তখন ওই সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের এমন প্রশ্ন না থাকলে হয়তো শেখ হাসিনাকে আজকের পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হতো না, এমনটাই মনে করছেন অনেকেই।
চীন সফর উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেন, ”মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিরা চাকরি পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরা পাবে?” সেই বক্তব্যের জের ধরে মধ্যরাতে বিক্ষোভ করতে শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর, সিলেটের শাহজালাল ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের জের ধরে তারা শ্লোগান দিতে থাকেন।