জাতীয়

সাংবাদিকদের সাথে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সভা, একগুচ্ছ সুপারিশ

সাংবাদিকদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার পাশাপাশি জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের হাত থেকে সংবাদমাধ্যমকে মুক্ত রাখতে হবে। বিগত বছরে যেসব সাংবাদিকদের নামে মিথ্যা মামলা হয়েছে সেগুলো প্রত্যাহার করতে হবে।

গত পনের বছরে যেসব ভুয়া পত্রিকা নিবন্ধিত হয়ে ডিএফপি’র তালিকাভুক্ত হয়েছে সেগুলোকে বাদ দিতে হবে। পত্রিকায় সম্পাদক হিসেবে যোগদান করতে হলে সাংবাদিকতায় কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে বা সাংবাদিকতায় পেশাগত ডিগ্রী থাকতে হবে। উপজেলা এবং মফস্বল এলাকার প্রেসক্লাব সভাপতি ও সম্পাদককে জাতীয় প্রেসক্লাবের সদস্য নির্বাচিত করা এবং মফস্বল সাংবাদিকদের যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে সাংবাদিক লেখা স্টিকার ব্যবহার করে ভুয়া সাংবাদিকেরা বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ করে আসছে। এসব ভুয়া সাংবাদিকতা বন্ধের নিমিত্তে প্রেস ইনিস্টিটিউটে ডিপ্লোমা চালুকরণ বা সাংবাদিকদের মান উন্নয়নের জন্য স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান গঠন করতে হবে।

এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সাংবাদিকদের একক রেজিস্ট্রেশন নাম্বার প্রদান ও তাদের সরকারি পরিচিতি নিশ্চিত করতে হবে। ফলে এক জনের একাধিকবার সরকারি সুবিধা প্রাপ্তি বন্ধ হবে।

পাশাপাশি পিআইডির তত্তাবধানে সাংবাদিকদের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এ জন্য পিআইডিকে শক্তিশালী করতে হবে। প্রেসক্লাবসহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনগুলোকে স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে জবাবদিহিতার আওতায় আনলে সাংবাদিকতায় বস্তুনিষ্ঠতা ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পাবে।

৫ জানুয়ারি রবিবার পকাল ১১ টায় গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সাথে চট্টগ্রাম বিভাগের সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকগণ এসব সুপারিশ তুলে ধরেন। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ সভায় চট্টগ্রাম বিভাগের ৮টি জেলার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।

গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন প্রধান কামাল আহমেদ সভায় সভাপতিত্ব করেন। কমিশনের সদস্য অধ্যাপক গীতিআরা নাসরীন, আখতার হোসেন খান, বেগম কামরুন্নেসা হাসান, আব্দুল্লাহ আল মামুন, মোস্তফা সবুজ উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রাম পিআইডির উপপ্রধান তথ্য অফিসার মো. সাঈদ হাসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ কামরুজ্জামানসহ বিভিন্ন দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ সভায় উপস্থিত ছিলেন।

কমিশন প্রধান কামাল আহমেদ তাঁর বক্তব্যে বলেন, সংবাদপত্রকে স্বাধীন, শক্তিশালী ও বস্তুনিষ্ঠ করার জন্য এ সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। এ কমিশনের প্রধান লক্ষ্য থাকবে সংবাদ প্রতিষ্ঠান এবং সাংবাদিকদের কাজের ক্ষেত্রে পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের সম্পাদকীয় নীতিমালা নেই

সারা দেশে সম্পাদকীয় মান অভিন্ন ন্যাশনাল স্টান্ডার্ড থাকা উচিত, সব প্রতিষ্ঠান মেনে চলবে ন্যূনতম সাংবাদিকতার নৈতিকতার দিকগুলো- সেরকম কোন কিছু নেই। সেটার জন্য আমরা সম্পাদক পরিষদকে বলেছি। 

কমিশন প্রধান বলেন, আমাদের দেশে একই মিডিয়া হাউসকে টেলিভিশন চ্যানেল, অনলাইন পোর্টাল, প্রিন্ট ভার্সন বা অনলাইন রেডিওর অনুমতি দেয়া হয়েছে। ফলে একই খবর ভিন্ন ভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে।

এতে পাঠক ভিন্ন কোন মত বা বৈচিত্র পাচ্ছেন না। এগুলোর সমাধান আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। আপনারা আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত mrc.portal.gov.bd এ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে মতামত বা সুপারিশ কমিশনের কাছে পৌঁছাতে পারবেন। আপনাদের প্রেরিত মতামত বিবেচনা করে কিভাবে গণমাধ্যমে সংস্কার আনা যায় এ বিষয়ে কমিশন সুপারিশ পেশ করবে।

Author

মোহাম্মদ ইসমাইল (ইমন), স্টাফ রিপোর্টার

পেশায় একজন সাংবাদিক। তিনি ৩০ মে থেকে মিশন ৯০ নিউজে চট্টগ্রাম বিভাগীয় এলাকায় স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে, সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker