একনেকে উঠছে ৬০ হাজার কোটি টাকার ৪ প্রকল্প
► ১০ গুণ ব্যয়ের কালুরঘাট সেতুও পাচ্ছে অনুমোদন ► মাতারবাড়ী পোর্ট উন্নয়নে ব্যয় বাড়ছে ৬,৫৭৪ কোটি টাকা
অন্তর্বর্তী সরকারের দ্বিতীয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ৬০ হাজার ৮৯৮ কোটি টাকার চার বড় প্রকল্প নতুন করে বরাদ্দের অনুমোদন পাচ্ছে। প্রকল্প চারটিতে ২৪ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা নতুন করে বরাদ্দ দেওয়া হবে। নতুন ও সংশোধিত চার প্রকল্পই বৈদেশিক ঋণের। এ ছাড়া একনেক সভায় মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য তিন হাজার ৩৯৮ কোটি টাকার আটটি প্রকল্প তোলা হচ্ছে।
আজ সোমবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সব উপদেষ্টা ও পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা উপস্থিত থাকবেন।
সভায় ১৯ হাজার ৫৬ কোটির সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্প-২ : এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পে ৪২৩ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ানো হচ্ছে। এবং নতুন করে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দুই বছর মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে।
এই প্রকল্পে ১১ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। ব্যয় বাড়ার কারণ হিসেবে ভূমি অধিগ্রহণ, ইউটিলিটি স্থানান্তর ও অন্যান্য খাতে ব্যয় বৃদ্ধি উল্লেখ করা হয়েছে।
নির্বাচিত তিনটি অর্থনৈতিক গ্রোথ করিডরের অন্তর্ভুক্ত ছয়টি সিটি করপোরেশন ও ৮১টি পৌরসভার জলবায়ু সহনশীল নগর অবকাঠামো উন্নয়ন ও পরিষেবাসমূহ বৃদ্ধি করতে পাঁচ হাজার ৯০১ কোটি টাকা ব্যয়ে রিজিলিয়েন্ট আরবান অ্যান্ড টেরিটরিয়াল ডেভেলপমেন্ট (আরইউটিডিপি) প্রকল্প একনেকে তোলা হচ্ছে। প্রকল্পটিতে চার হাজার ২৫৯ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক।
এর আওতায় ৮৮০ কিলোমিটার নগর সড়ক উন্নয়ন, ২০০০ মিটার ব্রিজ বা কালভার্ট নির্মাণ, ২০০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে বা ফুটপাত নির্মাণ, ৫৯৫ কিলোমিটার স্ট্রিট লাইট স্থাপন ও অন্যান্য কাজ করা হবে।
চট্টগ্রামের কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর ওপর একটি রেল-কাম-রোড সেতু নির্মাণে ১১ হাজার ৫৬০ কোটি টাকার প্রকল্প একনেকে তোলা হচ্ছে। প্রকল্পটিতে সাত হাজার ১২৫ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে কোরিয়া। অথচ প্রকল্পটি ২০১৮ সালে এক হাজার ১৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নের জন্য একনেকে তোলা হয়েছিল। অর্থাৎ ১০ গুণ ব্যয়ে প্রকল্পটি বৈদেশিক ঋণ নিয়ে অনুমোদন পেতে যাচ্ছে।
একনেক সভায় মাতারবাড়ী পোর্ট ডেভেলপমেন্ট (দ্বিতীয় সংশোধিত) প্রকল্প অনুমোদন পেতে যাচ্ছে। প্রকল্পটির ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ২৪ হাজার ৩৮১ কোটি টাকা। দ্বিতীয় সংশোধনীতে ব্যয় বাড়ছে ছয় হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা। প্রকল্পটিতে ২০২৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত আরো তিন বছর মেয়াদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে, কক্সবাজার মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের মাধ্যমে বাংলাদেশের কার্গো হ্যান্ডলিং ক্ষমতা বৃদ্ধি করে চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর চাপ কমানোসহ ভবিষ্যৎ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চাহিদা মেটানো।
প্রকল্পের মাধ্যমে এক হাজার ২৯১ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন ৭৬০ মিটার বার্থ নির্মাণ, ৩৯৭ মিটার ব্রেক ওয়াটার নির্মাণ, সড়ক প্রতিরক্ষাসহ ১৬.৫২৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হবে।
এ ছাড়া একনেক সভায় তিন হাজার ৩৯৮ কোটি টাকার আট প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হবে। প্রকল্পগুলো হলো, কুষ্টিয়ায় নতুন সার্কিট হাউস নির্মাণ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প, ভূঞাপুর-তারাকান্দি মহাসড়ক (জেড-৪৮০১) যথাযথ মান ও প্রশ্বস্ততায় উন্নীতকরণ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প, বৈরাগীপুল (বরিশাল)-টুমচর-বাউফল (পটুয়াখালী) জেলা মহাসড়ক (জেড-৮৯১০) যথাযথ মান ও প্রশ্বস্ততায় উন্নীতকরণ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প,
বরিশাল-ভোলা-লক্ষ্মীপুর জাতীয় মহাসড়কের (এন-৮০৯) বরিশাল (চর কাউয়া) থেকে ভোলা (ইলিশ ফেরিঘাট) হয়ে লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত সড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প, বরিশাল (সিনারেরপুল)-লক্ষ্মীপাশা-দুমকী জেলা মহাসড়কের ১৪তম কিলোমিটারে রাঙামাটি নদীর ওপর গোমা সেতু নির্মাণ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প, কুলাউড়া-পৃথিমপাশা-হাজীপুর-শরীফপুর (জেড-২৮-২২) সড়কের ১৪তম কিলোমিটারে পিসি গার্ডার সেতু (রাজাপুর সেতু) নির্মাণ ও ৭.৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প, প্রি-পেমেন্ট মিটারিং প্রজেক্ট ফর সিক্স এনওসিএস ডিভিশন আন্ডার ডিপিডিসি (বিশেষ সংশোধিত) প্রকল্প ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন : ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন প্রকল্প।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts sent to your email.