জাতীয়

কোটা আন্দোলন ছড়িয়েছে সারা দেশে, সঙ্গে ভোগান্তিও

সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচিতে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে রাজধানী ঢাকা। সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সারাদেশে চালিয়ে যাচ্ছেন এ কর্মসূচি। একই সঙ্গে সারা দেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেশের গুরুত্বপূর্ণ অনেক সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করছেন। এতে ভোগান্তিতে সারা দেশের মানুষ।

এদিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও মহাখালী আমতলী রেললাইন অবরোধ করে রেখেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এতে ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। রাজশাহীতেও রেল লাইন অরবোধ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

কোটা নিয়ে হাইকোর্টের রায়ে স্থিতাবস্থার প্রতিক্রিয়ায় শিক্ষার্থীরা বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবেই। আজ বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বুধবার দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে শাহবাগে এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চলবে ব্লকেড। ৭টায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পরবর্তী কর্মসূচি জানিয়ে দেওয়া হবে।

দুপুর ১২টার দিকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে রাজধানীর যাতায়াত ব্যবস্থা। বাসসহ অন্য যানবাহন প্রধান সড়কগুলোয় আটকা পড়েছে। রাজধানীর প্রায় সব সড়ক অবরোধের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ঢাকাবাসী। যান চলাচল বন্ধ থাকায় হেঁটে গন্তব্য পৌঁছাতে হচ্ছে তাদের।

সড়কে যান না থাকায় মেট্রোতে ছুটছে রাজধানীবাসী।

এমন পরিস্থিতিতে গত কয়েকদিন ধরেই মেট্রো রেলের ভরসায় চলাচল করছিল তারা। কিন্তু আজ বুধবার দুপুরে সেই মেট্রো রেলের গেটেও তালা দিয়ে রাখা হয়েছে। গেটে দায়িত্বরত কেউ নেই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যাত্রীর চাপের কারণে মূল ফটক তালা দিয়ে রাখা হয়েছে।

এদিকে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংক্রান্ত বিষয়বস্তুর ওপর চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা দিয়ে সব পক্ষকে এ স্থিতাবস্থা মেলে চলতে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

কোটা পদ্ধতি নিয়ে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর করা আবেদনে শুনানির পর বুধবার এ আদেশ দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।

প্রধান বিচারপতি আদেশে বলেন, ‘স্টেটাসকো মানে হলো স্থিতাবস্থা, সবাই আপনারা তা জানেন। অর্থাৎ এটা নিয়ে আর কোনো কথা হবে না। লিভ টু আপিল (রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) না আসা পর্যন্ত যার যার কাজে ফিরে যান।’ এরপর আদালত আগামী ৭ আগস্ট পরবর্তী শুনানি ও আদেশের তারিখ রাখেন।

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কর্মসূচি পরিহার করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মানুষের দুর্ভোগ হয়, এমন কর্মসূচি পরিহার করে শিক্ষার্থীদের বলব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে যেতে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, আগামী আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে চূড়ান্ত শুনানির মাধ্যমে নিষ্পত্তি হবে কোটা সংস্কার। এ পর্যন্ত মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি হতে পারে, এমন কর্মসূচি বন্ধ করে আদালতের নির্দেশ মেনে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানাই।

Author

সম্পর্কিত সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker