ঢাবি শিক্ষার্থী হত্যায় আটক ৩ জনই এলাকায় নানা অপরাধের সাথে যুক্ত ছিলেন
মাদারীপুরে গ্রামের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে বেরিয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য: চাঁদাবাজি, মাদকাসক্তি ও স্থানীয় রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাম্য হত্যায় আটককৃত তিনজনের গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর জেলায়। আটককৃতরা হলেন মাদারীপুর সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের শিমুলতলা এলাকার বাসিন্দা তামিম (৩০) ও পলাশ সরদার (৩০), এবং ডাসার উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের শশীকর এলাকার সম্রট মল্লিক (২৮)।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তারা তিনজনই বিভিন্ন সময়ে এলাকায় নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পট পরিবর্তনের আগে তামিম ও পলাশ গ্রামের নিজ বাড়িতেই থাকতেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে তাদের চলাফেরা ছিল বলে জানা গেছে। এছাড়া ডাসার উপজেলার নবগ্রামের শশীকর এলাকার সম্রাট মাদকাসক্ত বলে স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঝাউদি ইউনিয়নের শিমুলতলা এলাকার এরশাদ হাওলাদারের ছেলে তামিম ও কালাম সরদারের ছেলে পলাশ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সোহেল খাঁ ও রুবেল খাঁ গ্রুপের লোক হিসেবে পরিচিত ছিল। তারা এদের লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে কাজ করতো। আওয়ামী লীগের দলীয় কোনো পদ-পদবি না থাকলেও তারা আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় থাকতো। তারা চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে জড়িত। ৫ আগস্ট পট পরিবর্তনের পর তারা ঢাকায় চলে আসে এবং আর বাড়িতে ফেরেনি। পলাশের বাবা কালাম সরদার একসময় পালকি বহন করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। অন্যদিকে তামিমের বাবা এলাকায় জমি বেচা-কেনার সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে, ডাসারের যতীন্দ্রনাথ মল্লিকের ছেলে সম্রাট মল্লিক এলাকায় মাদকাসক্ত হিসেবে বেশ পরিচিত। বেশ কিছুদিন আগে মসজিদের মাইক লাগানো নিয়ে সে এলাকায় ছাত্রদের মারধর করেছিল। এ নিয়ে ডাসার থানায় সম্রাটের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ রয়েছে।
জানতে চাইলে স্থানীয় সাজ্জাদ হোসেন নামে এক ব্যক্তি বলেন,
এরা ভালো পরিবারের ছেলে না। চাঁদাবাজি, মাদকের সঙ্গে জড়িত। আগে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতার লাঠিয়াল গ্রুপের সদস্য ছিল। এখন এলাকা ছেড়ে ঢাকায় থাকে।
ডাসারের স্থায়ী বাসিন্দা রাকিবুল ইসলাম বলেন,
শুনেছি ঢাকার তিনশ ফিট, টিএসসিসহ বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি করে এই গ্রুপটি।
জানতে চাইলে মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল হোসেন বলেন,
আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি ওদের বিরুদ্ধে এখানকার থানায় কোনো মামলা রয়েছে কিনা। ইতোমধ্যে খোঁজ নেওয়া শুরু হয়েছে।
অন্যদিকে ডাসার থানার ওসি শেখ মো. এহতেশামুল ইসলাম জানান,
সম্রাটের বিরুদ্ধে ডাসার ও ডিএমপির রুপনগরসহ বিভিন্ন থানায় ৩টি মাদক মামলা রয়েছে। তার বিষয়ে আমরা বিস্তারিত খোঁজখবর নিচ্ছি।