আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবির প্রেক্ষিতে সরকারের বিবৃতি: ছাত্রলীগ ইতোমধ্যে নিষিদ্ধ
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ নিয়ে চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে বিবৃতি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সন্ত্রাস ও মানবতাবিরোধী অপরাধে আইনি পদক্ষেপের আভাস।
ঢাকা, ৯ মে ২০২৫:
আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে নিষিদ্ধ করার দাবিতে দেশজুড়ে চলমান বিক্ষোভ ও আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ বিবৃতি দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বৃহস্পতিবার রাতে দেওয়া ওই বিবৃতিতে সরকার জানায়, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে ওঠা সন্ত্রাস, দমন-পীড়ন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু হয়েছে এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে আলোচনা চলছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, জাতিসংঘের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ থাকায় সেটি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
সরকার ইতোমধ্যেই ছাত্রলীগকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং নিষিদ্ধ করেছে। সরকারি ভাষ্য অনুযায়ী, সংগঠনটি চলমান তদন্তে সহযোগিতা না করে বরং দেশের স্থিতিশীলতা নষ্টের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এছাড়া, সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে সংশোধনী আনার কাজ শুরু হয়েছে। এটি কার্যকর হলে যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা এবং রাজনৈতিক সহিংসতার সঙ্গে জড়িত সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া সহজ হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, সাবেক রাষ্ট্রপতি ও আলোচিত ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রতীক মো. আবদুল হামিদের দেশত্যাগ এবং তার বিরুদ্ধে চলমান মামলার বিষয়েও সরকার অবগত। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামি থাকা সত্ত্বেও তাঁর দেশত্যাগ নিয়ে জনমনে তৈরি হওয়া ক্ষোভ সরকার গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। এ বিষয়ে যথাযথ আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।
এই ঘোষণার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই একে সরকারের “পলিসি শিফট” হিসেবে দেখছেন এবং আশা করছেন যে, দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এবার সত্যিকার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সহজ হবে না, কারণ তা কেবল আইনগত নয়, একটি গভীর কূটনৈতিক ও সাংগঠনিক সিদ্ধান্তও।