আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের দাবি আরাকান আর্মির

আরো একটি শহর দখল করে নিয়েছে মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াইরত সবচেয়ে শক্তিশালী জাতিগত সংখ্যালঘু সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে একটি কৌশলগত পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর মংডুর শেষ সেনা ফাঁড়িটি দখল করার দাবি করেছে।

গত মে মাসের শেষের দিকে মংডু আক্রমণ শুরু করে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। তীব্র লড়াইয়ের মাধ্যমে সীমান্তবর্তী এই শহরের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পেতে ছয় মাস সময় লাগল তাদের।

মংডু শহর দখলে নেওয়ার ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের ২৭১  কিলোমিটার (১৬৮ মাইল) দীর্ঘ সীমান্তের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে আরাকান আর্মি (এএ)।

রাখাইন মিয়ানমারের দেশব্যাপী গৃহযুদ্ধের একটি কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে, যেখানে গণতন্ত্রপন্থী গেরিলা এবং জাতিগত সংখ্যালঘু সশস্ত্র বাহিনী দেশটির সামরিক শাসকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। দেশটির জান্তা সরকার ২০২১ সালে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতা গ্রহণ করে নিয়েছিল।

আরাকান আর্মির একজন মুখপাত্র খাইং থুখা সোমবার গভীর রাতে একটি অজ্ঞাত স্থান থেকে টেক্সট বার্তার মাধ্যমে দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেছেন, ‘তার দল গত রবিবার মংডুতে শেষ অবশিষ্ট সামরিক ফাঁড়িটি দখল করেছে।

খইং থুখা বলেন, ‘ফাঁড়ির কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুন পালানোর চেষ্টা করার সময় ধরা পড়েছেন’। এর বাইরে ৮০ রোহিঙ্গা বিদ্রোহী ও জান্তা সেনাকে গ্রেপ্তার করেছে আরাকান আর্মি।

সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মংডুর পরিস্থিতি স্বাধীনভাবে তারা যাচাই করতে পারেনি। এই এলাকায় ইন্টারনেট এবং মোবাইল ফোন পরিষেবার বেশিরভাগই বিচ্ছিন্ন।

মিয়ানমারের সামরিক সরকারও তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। 

মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ের প্রায় ৪০০ কিলোমিটার (২৫০ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমে মংডু শহর অবস্থিত। বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি এ বছরের শুরুর দিকে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী দুটি শহর পালেতওয়া এবং বুথিডাংও দখল করে নেয়। ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে আরাকান আর্মি রাখাইনের ১৭টি প্রশাসনিক উপবিভাগের মধ্যে ১১টি দখল করেছে এবং চিন রাজ্যের একটির নিয়ন্ত্রণ পেয়েছে।

বিদ্রোহী গ্রুপটি শুক্রবার গভীর রাতে টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপে পোস্ট করা একটি বিবৃতিতে বলেছে, ‘সেনাবাহিনীর পশ্চিমাঞ্চলীয় কমান্ড ব্যতীত তারা ৩০টিরও বেশি সামরিক ফাঁড়ি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।

’ সেনাবাহিনীর পশ্চিমাঞ্চলীয় কমান্ড রাখাইন এবং প্রতিবেশী চিন রাজ্যের দক্ষিণ অংশের পাশাপাশি বঙ্গোপসাগরে দেশটির আঞ্চলিক জলসীমা নিয়ন্ত্রণ করে।

মিয়ানমার ও বাংলাদেশের সীমান্ত স্থলভাগ থেকে নাফ নদী এবং বঙ্গোপসাগরের উপকূল পর্যন্ত বিস্তৃত। আরাকান আর্মি গত রবিবার জানিয়েছে, তারা নাফ নদীর ওপারে পরিবহন স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছে, কারণ সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত পুলিশ এবং স্থানীয় মুসলিমরা নৌকায় করে বাংলাদেশে পালানোর চেষ্টা করছিল। আরাকান আর্মি এখন দক্ষিণ রাখাইনের গাওয়া, তাউনগুপ ও আন শহরের নিয়ন্ত্রণ নিতে লড়াই করছে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker