আন্তর্জাতিক

ভারতের হামলা কি সন্ত্রাস দমনে কার্যকর হবে? বিশ্লেষকদের ভাষায় ‘গার্জিয়ান থিয়েটার’ মাত্র

পাকিস্তানে হামলার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বেশি, সন্ত্রাসবিরোধী কৌশল নয়—মনে করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা

ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী ৭ মে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে যুদ্ধপর্যায়ের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। সরকারি ভাষ্য অনুযায়ী, ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পাহেলগামে ২৬ জন হত্যার জবাব হিসেবেই এই আক্রমণ। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, এই হামলার বাস্তবিক কোনও প্রতিরোধমূলক (deterrent) মূল্য নেই, বরং এটি রাজনৈতিক বার্তা হিসেবে পরিকল্পিত।


🎯 ‘ঘরোয়া দর্শকদের জন্য থিয়েটার’—বিশ্লেষকদের মতামত

দক্ষিণ এশিয়ার সন্ত্রাসবাদবিষয়ক বিশ্লেষণা প্ল্যাটফর্ম SATP-এর নির্বাহী পরিচালক অজয় সাহনি বলেন—

“ভারতের এই হামলার উদ্দেশ্য সামরিক অর্জনের জন্য নয়, বরং প্রধানমন্ত্রী মোদির ঘরোয়া ভোটারদের উদ্দেশে বার্তা দেওয়ার জন্য।”
তিনি আরও বলেন,
“এগুলোতে জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর সক্রিয়তা বন্ধ হবে না, বরং কৌশলে সামান্য পরিবর্তন ঘটবে।”


🧭 আক্রমণের লক্ষ্য ও প্রতিক্রিয়া

ভারতের দাবি অনুযায়ী, তারা লস্কর-ই-তৈয়বার মুরিদকে ঘাঁটি, ও জয়শ-ই-মোহাম্মদের বাহাওয়ালপুর সদরদপ্তরে আঘাত হেনেছে।
এই দুটি গোষ্ঠী যথাক্রমে ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলা ও ২০১৯ সালের পুলওয়ামা আত্মঘাতী হামলার জন্য দায়ী।

ভারতের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এক্স-এ বলা হয়েছে—

Justice is served।”

কিন্তু পাকিস্তান দাবি করেছে, হামলায় ৩১ জন বেসামরিক মানুষ নিহত, যাদের মধ্যে দুই শিশু ছিল। ভারত বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।


🔥 বিপজ্জনক সিঁড়িঘাটায় উপনীত দুই পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র

সাবেক ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা ও বিশ্লেষক অজয় শুক্লা বলেছেন—

“এই ধরণের অনিয়ন্ত্রিত পাল্টা হামলায় দুই পক্ষই তাদের নিজস্ব দর্শকদের সামনে জয় দাবি করলেও, বাস্তবে কেউ জয়ী হয় না।”

তিনি সতর্ক করে বলেন—

“একসময় দুটি পক্ষই কিছু ‘ক্যালিব্রেটেড লাইন’-এর মধ্যে থাকত, এখন আর সেই সীমারেখা স্পষ্ট নেই। এটা একটি ‘রিস্কি স্পাইরাল’ যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।”


🌀 তিন দশকের ‘নবায়নশীল’ সশস্ত্র আন্দোলন

অজয় সাহনি মনে করিয়ে দেন—

“১৯৯০ দশক থেকে ভারত সশস্ত্র বিদ্রোহ দমন করতে চাইলেও, প্রতিবার হামলার পরই নতুন করে ওই আন্দোলন মাথা তোলে।”

তিনি বলেন, যতক্ষণ পাকিস্তানে আংশিক বা মৌন সমর্থন পায় এই গোষ্ঠীগুলো, ততক্ষণ এগুলোর অস্তিত্ব পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হবে না।


📌 মূল বার্তা: প্রতিশোধ নয়, বাস্তব কৌশল দরকার

ভারতের এই হামলা মূলত প্রতীকী পদক্ষেপ। সন্ত্রাস দমন কিংবা সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেয়ে এটা রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়ার অংশ, যা সম্ভবত পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করবে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker