টেলিভিশন কিংবা ইউটিউব ভিত্তিক নাটকের জন্য ভ্যালেন্টাইন কিংবা ঈদ উৎসব একটা বড় উপলক্ষ্য। বিশেষ এই উৎসবগুলো ঘিরে নির্মিত হয় কয়েক শতাধিক নাটক। দর্শকেরাও তুমুল আগ্রহ নিয়ে মুখিয়ে থাকেন। কিন্তু এবার ভ্যালেন্টাইন ও শবে-বরাত একই দিনে হওয়ায় সেই উৎসব যেন অনেকটাই ফিকে হয়ে গেছে।
ধর্মীয় এই উৎসবের কারণে একাধিক নাটকের মুক্তি পিছিয়ে গেছে। কেউ কেউ আবার পূর্ব ঘোষণা দিয়েও মুক্তি পিছিয়ে নিয়ে গেছেন ঈদে। আবার কেউ কেউ এখনও নাটক মুক্তির তারিখ চূড়ান্ত করতে পারছেন না, রয়েছেন দ্বিধা-দ্বন্দ্বে।
এরমধ্যে ভালোবাসা দিবস ঘিরে আগে-পরে বেশ কিছু নাটক উন্মুক্ত হয়েছে কিন্তু সেভাবে কোনো আলোচনা তৈরি করতে পারেনি।এদিকে দর্শকেরাও পরিচালকদের নাটক মুক্তি পেছানো নিয়ে খানিক হতাশ। প্রশ্ন উঠছে, উৎসব ঘিরে নির্মিত কাজ উৎসবের সময় না দিয়ে পরে মুক্তি দিলে সেটির আমেজ থাকবে কি? অনেকের মতে, এবারের ভালোবাসা দিবসে বেশ কিছু ভালো প্রজেক্ট থাকলেও মুক্তি পেছানোয় দর্শকদের মধ্যে খানিক অনীহা তৈরি হয়েছে! এ প্রসঙ্গে কালের কণ্ঠকে নির্মাতা ভিকি জাহেদ বলেন, ‘অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার কিন্তু নাটক কম। এরমধ্যে অর্ধেক কাজই পিছিয়ে গেছে স্পন্সর ইস্যুতে, তা ছাড়া একই দিনে শবে-বরাত হবার কারণে। সব পরিচালক-প্রযোজকই তো চায় তাদের কাজটা দর্শক দেখুক। এখন যেহেতু একইদিনে শবে-বরাত পড়েছে সেহেতু কাজগুলো হয়ত দর্শক দেখবে না; সবাই এটাই চিন্তা করেছে।’উৎসবের আমেজ প্রসঙ্গে ‘চিরকাল আজ’ খ্যাত এ নির্মাতা বলেন, ‘একই দিনে অনেকগুলো নাটক মুক্তি দিলে দর্শকদেরও তো সেটা দেখার মতো সময় লাগবে। সবারই ত সবার কথা চিন্তা করতে হয়। ভ্যালেন্টাইন ডে থেকে শুরু করে ফেব্রুয়ারির ২৮ পর্যন্ত আমার মনে হয় উৎসবের আমেজটা থাকবে। যখন কাজগুলো রিলিজ হবে তখন সেগুলো নিয়ে আবার আলোচনা-সমালোচনা হবে। তাই দর্শকদের এখনই হতাশ হবার কিছু নেই। ’একই প্রসঙ্গে নির্মাতা জাকারিয়া সৌখিনের ভাষ্য, ‘যেহেতু বাংলাদেশ একটা মুসলিম প্রধান দেশ এখানে শবে-বরাত অনেক বড় একটা ফ্যাক্টর। এবার একই দিনে ভ্যালেন্টাইন ও শবে-বরাত হবার কারণে নাটকগুলোর মুক্তি পিছিয়েছে। তা নাহলে ওইদিনই অনেকগুলো কাজ রিলিজ হতো। আর আমার কাছে মনে হয় কনটেন্ট ভালো হলে রিলিজের পর অটোমেটিকই উৎসব তৈরি হয়ে যায়।’ একইসঙ্গে অনেকগুলো নাটক রিলিজ হলে তখন দর্শকদের মধ্যে একটা উৎসব উৎসব আমেজ অনুভব হয়। কিন্তু এবার সেরকম না হবার কারণেই এবারের উৎসবটি জমে উঠেনি বলে মনে করছেন নাট্য নির্মাতা মহিদুল মুহিম। তিনি বলেন, ‘এবার তো অন্যান্য বারের মতো অনেক কনটেন্ট নেই। আর যেগুলো আছে সেগুলো স্পন্সর জটিলতায় মুক্তি দিতে পারছে না। যার কারণে একইসঙ্গে অনেক নাটক মুক্তি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। যেগুলো সম্ভব হচ্ছে তাও বিক্ষিপ্তভাবে রিলিজ হতে যাচ্ছে। এই বিক্ষিপ্তভাবে হবার কারণেই উৎসবের আমেজটা অনুভব হচ্ছে না। কনটেন্টগুলো রিলিজ হলে তখন হয়তো কনটেন্টের জোরে সেটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হবে।’