বিনোদন

কোন ক্ষোভ থেকে তাপসকে পিটিয়ে ‘বাবা’ ডাকাতে চেয়েছিলেন অরুণা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শিল্পীদের মধ্যে দুইটি দল বিভক্তি দেখা যায়। ছাত্র-জনতার পক্ষে অভিনয়শিল্পী বা কলাকুশলীদের একাংশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। তারা সরব ছিলেন শেখ হাসিনা সরকারের নানা অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে তারকাদের একটি দল আওয়ামী সরকার পতনের আগে সক্রিয় ছিল শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে আওয়াজ তুলতে, তাদের আন্দোলন দমিয়ে রাখতে। আর এ পরিকল্পনাগুলোর ছক কষা হচ্ছিল ‘আলো আসবেই’ নামের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে। সম্প্রতি যার কথোপকথন ফাঁস হয়েছে।

‘আলো আসবেই’ কাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পর একে একে প্রতিবাদ মুখর হচ্ছেন শিল্পীরা। সবচেয়ে বেশি সমালোচনা হচ্ছে অরুণা বিশ্বাসকে নিয়ে। যিনি আন্দোলনকারীদের গায়ে ‘গরম জল’ ঢেলে দেয়ার কথা বলেছেন। অন্যদিকে প্রোফাইল লাল করার দায়ে সংগীতশিল্পী কৌশিক হোসেন তাপসকে ‘পেটানো’র আগ্রহও প্রকাশ করেছিলেন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপটিতে। গ্রুপে দেখা যায়, নায়ক ফেরদৌস তাপসের লাল প্রোফাইলের স্ক্রিনশট শেয়ার করেছেন গ্রুপটিতে। এরপর অরুণা মন্তব্য করেছেন এই বলে, ‘এই যে দেখুন সরকারের প্রিয় মানুষ তাপস (গান বাংলা)। বয়স যদি কম থাকতো পিটাইতে পিটাইতে বাবা ডাক শিখাইতাম।

Image

এমন মন্তব্য ফাঁস হওয়ার পর ক্ষোভে ফুঁসে উঠছে সোশ্যাল হ্যান্ডেল। গ্রুপটিতে অরুণা বিশ্বাসের অন্য মন্তব্যগুলো ভাইরাল। বিষয়টি কৌশিক হোসেন তাপসের নজরেও এসেছে। জানিয়েছেন প্রতিক্রিয়া। তাপস মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন, যেখানে অরুণা বিশ্বাসের কথোপকথন উঠে এসেছে। পোস্টে ক্যাপশনে তাপস বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট জবাব দিয়েছেন।

তাপস শুরুতেই ফেরদৌসকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, মিস্টার ফেরদৌস আহমেদ, দেশ যখন নির্বিচারে গুলির মুখে অন্ধকারে নিমজ্জিত, সেটি সহ্য করতে না পেরে ৩ আগস্ট আমিও জীবন বাজি রেখে লক্ষ জনতার সঙ্গে সংহতি জানিয়ে, রক্তে ভেজা পতাকার রঙে রাঙ্গিয়েছিলাম আমার সোশ্যাল হ্যান্ডেল। আর আপনি তখন নিজের বানানো ‘আলোর ঘরে’ বসে আমার নামে তালিকা করছিলেন ‘আয়না ঘরে’র! ঠিক তার পরদিনই আমার সারাজীবনের সঞ্চয় ‘গান বাংলা’ ধ্বংস করে দিলো একদল অজানা দস্যু। নির্বিচারে মানুষ হত্যার প্রতিবাদ করেছি শুধু, এটাই কি আমার অপরাধ- স্রষ্টাই ভালো জানেন।

Image

এরপর ‘আলো আসবেই গ্রুপের অন্যতম সক্রিয় সদস্য অরুণাকে তাপস বলেন, মিসেস অরুণা বিশ্বাস, আজই অবাক বিস্ময়ে জানলাম- আপনি তখন সেই ‘আলোর ঘরে’ বসে আমাকেও ‘পেটানো’র পরিকল্পনা করছিলেন সহযোদ্ধাদের নিয়ে। বলছিলেন, বয়স থাকলে আমাকে নাকি পিটাইতে পিটাইতে ‘বাবা’ ডাক শেখাতেন! আমাকে যারা জানেন, তারা জানেন- আমি আমৃত্যু ছাত্র হয়েই থাকা মানুষ। শিখতে চাই সারাক্ষণ। দু’দিন আগে আপনি কানাডা পালিয়ে না গেলে হয় তো আমিই হাজির হতাম আপনার আলোকিত আয়না ঘরে, বাবা ডাক শিখতে। জানি না, এমন হিংস্রতা বুকে পুষে আলোর দেখা কখনও কেউ পায় কি না।

গণমাধ্যমকে সঠিক সংবাদ প্রকাশের আহ্বান জানিয়ে তাপস বলেন, সকল দায়িত্বশীল গণমাধ্যমের প্রতি প্রত্যাশা, আমাকে বা আমার পরিবারকে নিয়ে সত্যতা যাচাই-বাছাই না করে, কোনো চক্রান্তকারী মহলের প্ররোচনায় কিংবা কেবলমাত্র ভাইরাল হবার নেশায় অথবা গুজবের ভিত্তিতে কোনও কাল্পনিক, বানোয়াট, মিথ্যা বা অর্ধসত্য তথ্য পরিবেশন করে মানুষকে বিভ্রান্ত করবেন না। বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে, একজন গণমাধ্যমকর্মী কিংবা ৩৪ বছর ধরে শিল্পচর্চায় নিবেদিত একজন ক্ষুদ্র সংস্কৃতিকর্মী হিসেবে এতটুকু চাওয়ার অধিকার কি আমার নেই আপনাদের কাছে?

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker