বিনোদন

নিশো-মেহজাবীনের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি

প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিএমভির ইউটিউব চ্যানেল থেকে সমালোচনার মুখে ইউটিউব থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় ঈদের নাটক ‘ঘটনা সত্য’। শুধু নামিয়ে দেওয়াই হয়নি, নাটকে প্রচারিত সংলাপের কারণে ক্ষমা চাইলেন পরিচালক। পাশাপাশি নাটকের দুই অভিনয়শিল্পী আফরান নিশো ও মেহজাবীন চৌধুরী দর্শকের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

নাটকটিতে আফরান নিশো অভিনয় করেছেন ব্যক্তিগত গাড়ির ড্রাইভার চরিত্রে এবং মেহজাবীন অভিনয় করেছেন কাজের বুয়ার চরিত্রে। নাটকের শেষ দিকে বলা হয়, বাবা মা-র পাপের শাস্তি বা কর্মফলের কারণে প্রতিবন্ধী সন্তান জন্মগ্রহণ করে। এই সংলাপের পর তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েন নাটকের রচয়িতা, পরিচালক, কুশীলবরা।

এবার এই নাটকের সংশ্লিষ্টদের নামে মামলার ঘোষণা দিলো প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কয়েকটি সংগঠন। মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে এসব কথা বলা হয়।

সংবাদ সম্মেলনটি পরিচালনা করেন উইমেন উইথ ডিজঅ্যাবিলিটি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের (ডব্লিউডিডিএফ) নির্বাহী পরিচালক আশরাফুন নাহার, মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন প্রতিবন্ধী নাগরিক সংগঠন পরিষদের (পিএনএসপি) সালমা মাহবুব। প্রশ্নোত্তর পর্ব পরিচালনা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রেজাউল করিম সিদ্দিকী এবং অনুষ্ঠানের সার্বিক পরিচালনায় ছিলেন ন্যাশনাল কাউন্সিল অব ডিজঅ্যাবল উইমেনের সভাপতি নাসিমা আক্তার।

সেখানে আইনজীবী রেজাউল করিম সিদ্দিকী বলেন, তিনি নিজেও একজন প্রতিবন্ধী মানুষ। তিনি বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে আদালতের কার্যক্রম স্বাভাবিক হলেই তিনি মামলা করবেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ২৩ জুলাই একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে ‘ঘটনা সত্য’ নাটকটি প্রচার করা হয়। নাটকটি ইউটিউবেও আপলোড করা হয়। নাটকটিতে প্রতিবন্ধী সন্তান জন্ম দেওয়াকে কেন্দ্র করে মা–বাবার কান্নাকাটির মাধ্যমে ভীতিকর পারিবারিক ও সামাজিক চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়। ইউটিউবে নাটকটির প্রচারিত অংশে নেপথ্য কণ্ঠে প্রতিবন্ধিতাকে বলা হয়, ‘বাবা-মায়ের পাপের ফল’।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর আইনি অধিকার লঙ্ঘন করায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩-এর ৩৭ (৪) ধারায় মামলা করা হবে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ৩৫০টি সংগঠন এ আইনি ব্যবস্থার পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে। আইনের ওই ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি পাঠ্যপুস্তকসহ যেকোনো প্রকাশনা এবং গণমাধ্যমে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বা প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কে নেতিবাচক শব্দ ব্যবহার করলে অনধিক তিন বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

সম্মেলনের মূল প্রবন্ধে বলা হয়, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের যখন সমাজ ও রাষ্ট্র সমান সুযোগ দিতে কুণ্ঠাবোধ করে, তখন তাদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন হয়ে ওঠেন মা-বাবা। প্রতিবন্ধী সন্তান ‘বাবা-মায়ের পাপের ফল’ সমাজের একাংশের মধ্যে এ ভুল ও অবৈজ্ঞানিক বিশ্বাস বিদ্যমান থাকায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও তাদের অভিভাবকরা মানসিক নিপীড়নের শিকার হন। সেই ভুল ধারণা ও নিপীড়নকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে এই নাটক। এ ধারণা যে ঠিক নয়, নাটকটিতে সে সম্পর্কে কোনো বার্তা দেওয়া হয়নি।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker