আইন-আদালত

হাসিনা-জয়-টিউলিপের দুর্নীতি অনুসন্ধানে হাইকোর্টের রুল

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে ওঠা ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার (৫৯ হাজার কোটি টাকা) আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধান, তদন্তে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট।

এই অভিযোগ অনুসন্ধান-তদন্তে সংস্থাটির ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, জানতে রুল জারি করা হয়েছে। এসংক্রান্ত একটি রিট আবেদনে প্রাথমিক শুনানির পর রবিবার বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল দেন।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালযয়ের সচিব, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান, নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক, শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ খানসহ ১৪ জন বিবাদীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সাহেদুল আজম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজ বিন ইউসুফ ও শফিকুর রহমান। আর দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী চৌধুরী নাসিমা। 

আইনজীবী সাহেদুল আজম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘তিন মাস আগে রিট আবেদন নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার-প্রকাশিত খবরের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ শুরু করছে বলে দুদকের আইনজীবী শুনানিতে বলেছেন। যে কারণে আদালত কোনো নির্দেশনা না দিয়ে রুল জারি করেছেন।’

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার (৫৯ হাজার কোটি টাকা) আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধান, তদন্তে সংশ্লিষ্টদের ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে গত ৩ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ববি হাজ্জাজ। অবিলম্বে অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু এবং অনুসন্ধানে যাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চাওয়া হয় রিটে।

রিটে বলা হয়েছে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে এবং দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব দুদকের।

রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে বিশাল অঙ্কের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠার পরও দুদক সে অভিযোগ অনুসন্ধানে নিষ্ক্রিয়তা দেখিয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৫০০ কোটি ডলারের (৫৯ হাজার কোটি টাকা) বেশি আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ১৭ আগস্ট গ্লোবাল ডিফেন্স কর্পের এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এমন খবর প্রকাশ করে দেশের গণমাধ্যমগুলো। টাকা আত্মসাতের কাজে শেখ হাসিনাকে সহায়তা করেছেন তাঁর ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয় ও ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা রাশিয়ান রোসাটমের কাছ থেকে সোভিয়েত আমলের পারমাণবিক চুল্লি কিনতে ৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ আত্মসাৎ করেন।

বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণ ব্যয় ১২.৬৫ বিলিয়ন ডলার। মালয়েশিয়ার ব্যাংকে রক্ষিত বিভিন্ন রাশিয়ান স্ল্যাশ ফান্ড থেকে এই ৫ বিলিয়ন ডলার বিভিন্ন ব্যাংকে স্থানান্তরে শেখ হাসিনাকে সহায়তা করেছিল প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা রোসাটম। যাতে মধ্যস্থতা করেন সজীব ওয়াজেদ জয় ও টিউলিপ সিদ্দিক। রাশিয়ার পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker