ভূরুঙ্গামারীতে কাস্টমস কর্মকর্তা কর্তৃক হয়রানির প্রতিবাদে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ।
ব্যবসায়ীদের সাথে কাস্টমস কর্মকর্তার দ্বন্দ্বের জেরে উতপ্ত হয়ে ওঠেছে কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী। উভয় পক্ষ থেকে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। কাস্টমস কর্মকর্তা কর্তৃক ব্যবসায়ীদের লাঞ্চিত করার প্রতিবাদে দোকানপাট বন্ধ রেখে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ভূরুঙ্গামারী বনিক সমিতি।
জানাগেছে, ভ্যাট নিবন্ধনের জন্য ভূরুঙ্গামারী কাস্টমস অফিস থেকে ব্যবসায়ীদের নিকট এক সপ্তাহ আগে চিঠি প্রদান করে। চিঠি পেয়ে বনিক সমিতি কাস্টমস কর্মকর্তার সাথে বৈঠক করে এক মাসের সময় চান। এর মধ্যে যারা নিবন্ধন যোগ্য তাদের নিবন্ধনের প্রতিশ্রুতি দেন বনিক সমিতি। কিন্তু এক সপ্তাহ পার না হতেই রোববার ভূরুঙ্গামারী বাজারের ডাল ও মুড়ি ব্যবসায়ী মেসার্স ভাই ভাই ট্রেডার্স এর সত্ত্বাধিকারী আব্দুল কাদের সহ বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীর ক্যাশ মেমো, হিসাব খাতা, বাকির খাতাসহ অন্যান্য ব্যবসায়ীক কাগজপত্র নিয়ে যায় জয়মনিরহাট কাস্টমস অফিসের লোকজন। ভুক্তভোগী অটো পার্স ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান বলেন তার কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা ঘুস দাবি করেন পরে ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে দফারফা করেন। আরেক ভুক্তভোগী আশা ইন্টারপাইজ এর মালিক মাইদুল ইসলাম বলেন তার কাছে ২লক্ষ টাকা চাদা দাবি করেন পরে ৬০ হাজার টাকা দিয়ে মিটমাট করেন। এরকম আরো অনেক অভিযোগ রয়েছে কাস্টমস কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী আব্দুল কাদের এর মিল থেকে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি তার প্রতিষ্ঠান এর সমস্থ খাতা পত্র নিয়ে আসে এবং ১০ লক্ষ টাকা নিয়ে অফিস আসতে বলে।
আজ সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ব্যবসায়ী আব্দুল কাদের কাস্টমস অফিসে গিয়ে কাগজপত্র ফেরত চাইলে কাস্টমস কর্মকর্তা কাগজপত্র ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং খুব খারাপ ব্যবহার করে। উভয়ের মাঝে উতপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এতে কাস্টমস অফিসের মাস্টাররোলে কর্মরত মাইদুল হক(২৫) নামের এক কর্মচারী আহত হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে ব্যবসায়ীরা সংঘবদ্ধ হয়ে ভূরুঙ্গামারী -কুড়িগ্রাম সড়ক অবরোধ করে রাখে। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে তীব্র জ্যামের সৃষ্টি হয়।
খবর পেয়ে ভূরুঙ্গামারী থানা পুলিশের একটি দল ঘটনা স্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ব্যবসায়ীদেক বুঝিয়ে অবরোধ তুলে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এদিকে বিকেল পাঁচটার দিকে ভূরুঙ্গামারী বনিক সমিতি জরুরী বৈঠক থেকে ব্যবসায়ী লাঞ্চিত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে সকল ধরণের দোকান পাট বন্ধ করে বিক্ষোভ মিছিল করে। বিক্ষোভ মিছিল শেষে জামতলা মোড়ে এসে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর নিকট অভিযোগ দাখিল করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপক কুমার দেব শর্মা এবং উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুন্নবী চৌধুরী খোকন ব্যবসায়ীদের বলেন তদন্ত মোতাবেক কাস্টমস অফিসার এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবেন। ততক্ষণ আপনারা শান্তভাবে ব্যবসা পরিচালনা করুন।
ভূরুঙ্গামারী বনিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান মামুন ব্যাপারী বলেন, কাস্টমস অফিস থেকে ব্যবসায়ীরা প্রতিনিয়ত সয়রানির শিকার হচ্ছে। এর সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে।
কাস্টমস সুপারিন্টেন্ডেন্ট ওমর ফারুক বলেন, সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে আমি ও আমার স্টাফ বহিরাগতের দ্বারা হামলার স্বীকার হয়েছি। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
ভূরুঙ্গামারী থানার ওসি আলমগীর হোসেন জানান, ব্যবসায়ীদেরকে বুঝিয়ে অবরোধ তুলে নেয়া হয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts sent to your email.