লালমনিরহাট

ব্রীজ নির্মানের দুই বছর পেরিয়ে গেছে, তবুও মাটি ভরাট হয়নি সংযোগ রাস্তার, পথচারীর দুর্ভোগ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
লালমনিরহাটের মোগলহাট ইউনিয়নের ইটাপোতার দক্ষিণে ছড়ার উপর নির্মিত গার্ডার ব্রীজটি নির্মাণের দীর্ঘ দিন অতিবাহিত হলেও দুপাশে মাটি ভরাটসহ সংযোগ সড়ক না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে মোগলহাট ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। এ ব্রীজ দিয়ে পারাপার হয়ে যেতে হয় কর্ণপুর, বুমকা, খারুয়া, ইটাপোতার বিভিন্ন গ্রামের হাজার হাজার মানুষকে।

এলাকাবাসী জানান, আশেপাশের প্রায় ৫টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ জেলা শহরে আসার জন্য দীর্ঘদিনের চাওয়া ছিল ইটাপোতা নবী মিস্ত্রির বাড়ীর দক্ষিণে ছড়ার উপর একটি ব্রীজ। এলাকাবাসীর দির্ঘদিনের চাওয়া ব্রীজটি নির্মিত হলেও দুই পাশে মাটি ভরাট না করায় দুর্ভোগ কমেনি। সংযোগ সড়ক নির্মিত না হওয়ায় তাদের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। ব্রীজ নির্মিত হলেও এলাকাবাসী ব্রীজটি ব্যবহার করতে পারছে না।এই ব্রীজের পাশেই রয়েছে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। শিক্ষার্থীদের ব্রীজ পার হয়ে যেতে হয় বিদ্যালয়। এমনিতেই সংযোগ রাস্তা নেই তার উপর পায়ে হাটার যে রাস্তা রয়েছে সেটিও বর্ষা মৌসুমের কয়েক মাস পানিতে তলিয়ে থাকে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৬৮লক্ষ ৬৮হাজার ৭শত ৩ টাকা ব্যয়ে ইটাপোতা নবী মিস্ত্রির বাড়ীর দক্ষিণে ছড়ার উপর ১৫ মিটার ব্রীজ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। মেসার্স জামান এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ব্রীজটি নির্মান করে। দীর্ঘ দিন আগে ব্রীজের নির্মাণ কাজ শেষ হলেও ব্রীজের দুপাশে মাটি ভরাট করা হয়নি। এই সব এলাকার মানুষদের চলাচলের বিকল্প কোন রাস্তা না থাকায় ব্রীজের দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে তারা। বিশেষ করে স্কুল কলেজ পড়য়া শিক্ষার্থীদের বেশি দুর্ভোগ পোয়াতে হয়। ব্রীজ পার হওয়ার সময় একজন আরেকজনকে ব্রীজে টেনে তুলে অথবা একজন আরেকজনকে ঠেলে ব্রীজে তুলে পার হচ্ছে। এতে করে যে কোন সময় দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে ওই শিক্ষার্থীরা।

রাস্তা দিয়ে চলাচলকারীরা জানান, আগে ব্রীজ ছিল না, তখন যেভাবে কাপড় ভিজিয়ে রাস্তা পাড় হয়েছি ব্রীজ নির্মাণের পরও একই অবস্থা। তাহলে এই ব্রীজ নির্মানের কি প্রয়োজন ছিল বলে প্রশ্ন ছুড়ে দেন সাংবাদিকদের উপর।

ওই সব এলাকার রহিমুদ্দিন, ছাত্তার, আলমগীর, রমজান আলীসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, আমাদের দির্ঘদিনের প্রাণের দাবি ছিল ছড়ার উপর একটি ব্রীজ নির্মান। যাতে করে মোগলহাট ইউনিয়নের কর্ণপুর, বুমকা, খারুয়া, ইটাপোতার বিভিন্ন গ্রামের হাজার হাজার মানুষের যাতায়াতেের সুবিধা হয়। দির্ঘদিন পর ব্রীজটি নির্মিত হলেও এর কোন সুফল আমরা পাচ্ছি না আমরা। ব্রীজের দুই ধারে সংযোগ রাস্তা না থাকায় রোগী, শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের যাতায়াত কষ্টকর হয়ে পড়েছে। ব্রীজ নির্মান কাজ শেষ হওয়ার পরপই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সম্পুর্ন বিল উত্তোলন করলেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মাটি ভরাট না করেই চলে যায়। এখন মাটি ভরাটের কাজ নিয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান টালবাহানা করছে।

স্থানীয় বাবর আলী নামে এক স্কুল শিক্ষক জানান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রনালয়ের অধিনে লালমনিরহাট প্রকল্প বাস্তবায়ন (পিআইও) কর্মকর্তা মশিয়ার রহমানের তদারকিতে ২০২২ সালের জানুয়ারী মাসে ব্রীজে কাজ শেষ হয়। যদিও ঠিকাদার নুরুজ্জামান হোসেন সমস্ত বিল উত্তোলন করা শেষ করেছেন। ব্রীজের কাজ শেষ না হওয়ার পড়েও পিআইও কিভাবে ঠিকাদারকে বিল দিলেন তা আমার জানা নেই।

এ ব্যাপারে লালমনিরহাট প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মশিয়ার রহমানের নিকট মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারবেন না বলে ফোন বন্ধ করে রেখে দেন।

Author


Discover more from MIssion 90 News

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker