রংপুরে কমতে শুরু করছে তিস্তা নদীর পানি। তবে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর টানা কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে রংপুরের তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানি গতকালের চেয়ে ৪ সেন্টিমিটার কমেছে। গতকাল ছিল বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপরে।
এরপরও নদী পাড়ের মানুষের দুর্ভোগ আর ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। বন্যার ফলে রাস্তাঘাট বাড়িঘরে ঢুকে পড়েছে পানি। এতে নদীপাড়ের মানুষের আতঙ্ক বাড়ছে।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুরের তত্ত্বাবধয়ক প্রকৌশলী আহসান হাবীব জানান, তিস্তা নদীর পানি আস্তে কমতে শুরু করছে।
রংপুরের দুই উপজেলায় ঢুকে পড়েছে বন্যার পানি। তবে কিছু কিছু এলাকায় দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। ভাঙন রোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। রংপুরের কাউনিয়া ও গঙ্গাচড়া উপজেলায় ১০ গ্রামে পানি ঢুকে পড়ছে। দুর্ভোগ আর ভোগান্তিতে পড়ছে ওই সাধারন মানুষ। স্থানীয়দের দাবি বেড়িবাধ দেওয়ার।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং সকাল ৯টায় ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে। তলিয়ে গেছে পাঁচ গ্রামের আংশিক অংশ। ১০০হেক্টর ফসলি জমির আবাদের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসি।
আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আবারও পানি বাড়ার আশংকা করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড। অন্যদিকে বর্ষার শুরুতেই তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কারণে তিস্তা নদীর তীরবর্তী ও নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের মানুষ বন্যার আশংকা করছেন। তবে গবাদি পশু, ঘর বাড়ি নিয়ে বিপাকে পড়ছে নদীপাড়ের হাজারো মানুষ। অনেকেই বন্যার আভাস পেয়ে গবাদিপশু ও ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। নিজেরাও নিরাপদে উচু স্থানে আশ্রয় দিচ্ছেন।
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের গদাই গ্রাম পাঞ্চরভাঙ্গা ,হরিশর গ্রাম, আরাধি হরিশর গ্রামে ঢুকে পড়েছে। স্থানীয়দের বাড়ছে ভোগান্তি। এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। অনেকে আবার বাঁশ কেটে ভাঙন রোধের চেষ্টা করছেন।
কমাল হোসেন, জাকির, ছালাম মিয়া বলেন, পানি কমছে তবে ভেঙে যাচ্ছে বাড়িঘর, ক্ষতি হয়েছে ফসলের। রাস্তাঘাট ভেঙে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে তাদের। সরকারিভাবে কোনো ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে দাবি তাদের।
পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, তিস্তার নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানি কিছুটা কমছে। যা এখন বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্যারাজ পয়েন্টের ৪৪টি গোট খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে ডালিয়া পয়েন্টে পানি কমতে শুরু করেছে। যার কারণে ভাটি অঞ্চলে নদীপাড়ের মানুষের সমস্যা হচ্ছে।
রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান জানান, বৃষ্টির ফলে অনেক স্থানে পানি উঠেছে। গঙ্গাচড়া এবং কাউনিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে খোঁজখবর নেওয়ার। অতি দ্রুত তাদের কাছে সরকারিভাবে সহযোগিতা ও সাহায্য দেওয়া হবে। আর ভাঙন রোধে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts sent to your email.