নওগাঁ

যুবককে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর, যুবদল নেতাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে থানায় চাঁদাবাজি মামলা

নওগাঁর রাণীনগরে চাঁদার দাবিতে আলমগীর হোসেন (৩৫) নামে প্রবাস ফেরত এক যুবককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ব্যাপক মারধর ও দুই লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগে ইউনিয়ন যুবদলের এক নেতাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে থানায় চাঁদাবাজি মামলা হয়েছে। শনিবার রাতে রাণীনগর থানায় তাদের বিরুদ্ধে অপহরণ, চাঁদা দাবি ও চাঁদা আদায় আইনে এ মামলা দায়ের হয়।

মামলায় উপজেলার একডালা ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ন আহ্বায়ক ইমরান হোসেনকে (৩২) প্রধান আসামি করে ৫ জন এজাহার নামীয় এবং ৪ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার উপজেলার একডালা ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ন আহ্বায়ক ইমরানের নেতৃত্বে চকারপুকুর বিষঘরিয়া গ্রামের আলমগীর হোসেনকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে করজগ্রাম-মাধাইমুড়ি শ্বশানঘাটে তাকে ব্যাপক মারধর ও নির্যাতন করা হয়। এরপর চাঁদার দাবিকৃত টাকার মধ্যে দুই লাখ টাকা দেওয়ার পর আলমগীরকে ফেরত পেয়েছে তার পরিবার।

যুবক আলমগীর হোসেন আহত অবস্থায় নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আলমগীরের বাবা মোজাহার বাদি হয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় ইমরানসহ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে রাণীনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করলে শনিবার রাতে থানায় মামলা হয়েছে।

মারধর ও নির্যাতনের শিকার আলমগীর হোসেন জানান, দুই মাস হবে আমি বিদেশ থেকে বাড়িতে এসেছি। আমি কোন রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত না। তারপরও তারা আমার কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে চকারপুকুর গ্রামের ইমরান, কয়াপাড়ার বাদশা, কসবার ডলার ও নিলাম্বরপুরের শাহজাহানসহ বেশ কয়েকজন মোটরসাইকেলযোগে আমার বাড়িতে এসে অফিসে কথা হবে বলে তুলে নিয়ে যায়।

প্রথমে তারা আমাকে আবাদপুকুর বাজারে একটি স্কুলের পুকুরপাড়ে নিয়ে গিয়ে মারধর শুরু করে। ওখানে লোকজন জড়ো হতে থাকলে হরিপুর পৈদীঘি নামক শ্বশানঘাটে নিয়ে যায়। এরপর করজগ্রাম-মাধাইমুড়ি শ্বশানঘাটে নিয়ে যান। সেখানে শুরু হয় আমার উপর মারধর ও নির্যাতন। তারা আমাকে গোপন স্থানসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে মারধর করে রক্তাক্ত করেছে।

এরপর বাধ্য হয়ে বাড়িতে জানালে বাড়ি থেকে দুই লাখ টাকা নিয়ে আসলে আমি রক্ষা পাই। এরমধ্যে তারা আমার কাছ থেকে সাদা চারটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে নিয়েছে।

ভুক্তভোগীর বাবা মোজাহার আলী বলেন, চাঁদা দিতে না চাইলে বাড়ি থেকে আমার ছেলেকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারপিট করা হয়েছে। চাঁদার দুই লাখ টাকা না দিলে, তারা হয়তো আমার ছেলেকে মেরেই ফেলতো। এ ঘটনায় আমি বাদি হয়ে রাণীনগর থানায় মামলা দায়ের করেছি। ঘটনায় সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানাচ্ছি।

এ ব্যাপারে রাণীনগর থানার ওসি মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগীর বাবা বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

Author

মো: খালেদ বিন ফিরোজ, নওগাঁ প্রতিনিধি

পেশায় একজন সাংবাদিক। তিনি ৩০ মে থেকে মিশন ৯০ নিউজে নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি হিসেবে, সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker