নওগাঁ

নওগাঁয় ব্যতিক্রমী এক হাট, যেখানে অধিকাংশ বিক্রেতাই নারী

নওগাঁ শহরের তালতলী রোডের সাহানাবাগ সিটি এলাকায় ব্যতিক্রম উৎপাদকের হাট বাজার গড়ে উঠেছে। এখানে প্রতিদিন ভোর ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত চলে কেনাবেচা।
এ বাজারের অধিকাংশ বিক্রেতাই নারী উদ্যোক্তা। বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবজির পাশাপাশি পাওয়া যাচ্ছে মাছ, মাংস থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রী।
নারী উদ্যোক্তরা তাদের পণ্য এ বাজারে বিক্রি করতে পেরে সাবলম্বী হয়ে উঠছেন বলে জানিয়েছেন তারা। উৎপাদকের হাট-বাজার গড়ে ওঠায় খুশি এলাকার বাসিন্দারা।
রোববার (২৪ নভেম্বর) সরেজমিনে উৎপাদকের হাট বাজার ঘুরে দেখা যায়, ভোরের আলো ফোটার আগেই বিভিন্ন ধরনের কাঁচা সবজি এবং নানা পণ্যসামগ্রী বাজারে নিয়ে আসছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
তাদের নিজেদের উৎপাদিত পণ্যের পাশাপাশি গ্রামের প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের কাছ থেকে কিনে আনেন তারা।
মাছ, কাচা সবজির পাশাপাশি পাওয়া যাচ্ছে শীতের বাহারি রকমের পিঠা। ভোর থেকেই শুরু হচ্ছে কেনাবেচা। 
বাজারের ক্ষুদ্র সবজি ব্যবসায়ী মালা বানু বলেন, গত শনিবার থেকে এ বাজারে ব্যবসা করতেছি। আগে কোন কর্ম ছিল না। সংসার চালাইতে অনেক কষ্ট হতো।
এ বাজারে ব্যবসা করে আর্থিকভাবে কিছুটা লাভবান হচ্ছি। পরিবারকেও আর্থিকভাবে সহযোগী করতে পারছি।
এ বাজারের আরেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মিঠু বলেন, আগে অটোরিকশা চালাতাম এখানে বাজার গড়ে উঠাতে এখানে নতুন ভাবে ব্যবসা শুরু করেছি।
বেচাকেনা ভালোই হচ্ছে। আর্থিকভাবেও ভালোই লাভবান হচ্ছি।
উৎপাদকের হাট বাজারের খিচুড়ি ব্যবসায়ী শাহাদত হোসেন বলেন, আগে মসজিদে ইমামতির পাশাপাশি ধান চালের ব্যবসা করতাম।
হাসকিং মিলের ব্যবসায় ধস নামায় ওই ব্যবসা বাদ দিয়ে অনেকদিন বসে ছিলাম। গত কিছুদিন যাবৎ নতুনভাবে এ ব্যবসা শুরু করেছি। নিজেরা উপকৃত হওয়ার পাশাপাশি এলাকার মানুষরাও উপকৃত হচ্ছে। 
এ বাজারে পণ্য ক্রয় করতে আসা ক্রেতা নওগাঁ শহরের লাটাপাড়া এলাকার বাসিন্দা শাহিন বলেন, পাশেই মাঠ থেকে উৎপাদিত টাটকা পণ্য পাচ্ছি। পাশাপাশি সকালে হাঁটতে এসে বাজার হয়ে যাচ্ছে। 
আরজি নওগাঁ মধ্যপাড়া এলাকার বাসিন্দা আনিসুর রহমান বলেন, উৎপাদকের হাট-বাজারে টাটকা শাকসবজি পাশাপাশি মাছ, মাংস পাচ্ছি। বাজারের তুলনায় দাম কিছুটা কম এ বাজারে, ফলে আমাদের সুবিধা হচ্ছে। 
নওগাঁ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এলাকার বাসিন্দা লোকমান হোসেন  বলেন, বাজারে গেলে ২০ টাকা রিকশাভাড়া খরচ হতো, এখন সেইটা বেঁচে যাচ্ছে।
মাছ, মাংস সবকিছুই পাচ্ছি এ বাজারে। বাজার গড়ে ওঠায় এলাকার সকলেই আমরা উপকৃত হচ্ছি। 
উৎপাদকের হাট বাজারে উদ্যোক্তা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এই এলাকায় প্রায় ৫০-৬০ হাজার মানুষের বসবাস কিন্তু আশপাশে কোনো বাজার নাই।
এখান থেকে বাজারের দূরত্ব প্রায় ৫-৬ কিলোমিটার। ফলে এলাকার বাসিন্দাদের বাজারের জন্য অনেক দূরে বাজার করতে যেতে হত।
এই বাজারে ব্যবসায়ীরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের পাশাপাশি গ্রামের প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে পণ্য ক্রয় করে এনে বিক্রি করছে। ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি কৃষকরাও লাভবান হচ্ছে।

Author

মো: খালেদ বিন ফিরোজ, নওগাঁ প্রতিনিধি

পেশায় একজন সাংবাদিক। তিনি ৩০ মে থেকে মিশন ৯০ নিউজে নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি হিসেবে, সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker