নওগাঁয় স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টা করে স্বামীর বিষপানে মৃত্যু
নওগাঁ সদর আনন্দনগরে মাদকাসক্ত এক ব্যক্তি স্ত্রীকে হাসুয়া দিয়ে কুপিয়ে হাত বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করেন; পরে মাদক সেবন ও স্থানীয়দের মারধরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।
নওগাঁ সদর আনন্দনগর এলাকায় মাদকাসক্ত হয়ে নিজ কক্ষে স্ত্রী মৌয়ূরীকে হাসুয়া দিয়ে কুপিয়ে হাত বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করেন সুমন। তবে মাদক ও নেশা জাতীয় গ্যাস ট্যাবলেট সেবন এবং পরে স্থানীয়দের মারধরের কারণে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন সুমন। গতকাল (বুধবার, ২৮ মে) রাত ৯টার দিকে নিহত ওই ব্যক্তি তার শ্বশুরবাড়িতে এ ঘটনা ঘটান বলে জানা গেছে।
নিহত সুমন নওগাঁ সদর উপজেলার দুবলহাটি ইউনিয়নের দুবলহাটি গ্রামের মোহাম্মদ বাবুর ছেলে এবং পেশায় একজন গৃহনির্মাণ শ্রমিক ছিলেন। স্থানীয় এবং থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৩-৪ বছর আগে শহরের আনন্দনগর এলাকার আব্দুস সামাদের মেয়ে মৌয়ূরীর (২৪) সঙ্গে সুমনের বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের পর থেকেই সুমন তার স্ত্রীর সঙ্গে আনন্দনগর এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। সুমন বিভিন্ন সময় নেশাগ্রস্ত হয়ে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়াঝাঁটি করতেন এবং স্ত্রীকে সাংসারিক কোনো খরচ দিতেন না।
গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে মাদকাসক্ত হয়ে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়াঝাঁটি করেন সুমন। ঝগড়াঝাঁটির একপর্যায়ে হাসুয়া দিয়ে স্ত্রীর গলা এবং হাতে কোপ দেন। এতে তার স্ত্রীর বাঁ হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। স্থানীয় ও থানা পুলিশের সদস্যরা মৌয়ূরীকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে নিলে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
এদিকে, মাদক ও নেশা জাতীয় গ্যাস ট্যাবলেট সেবন এবং স্থানীয়দের মারধরে সুমনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ে। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তখন চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ১০টার দিকে ২৫০ শয্যা নওগাঁ সদর হাসপাতালে সে মৃত্যুবরণ করে।
এ বিষয়ে নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। পুলিশ আহত অবস্থায় দু’জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। ওই নারীর স্বামী মারধরে মারা যায়। সুমনের মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুমন মৃত্যুবরণ করেন। মৌয়ূরীর হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় চিকিৎসক তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।”
ওসি আরও জানান, “সুমনের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কেউ যোগাযোগ করেনি। মরদেহ নওগাঁ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে রয়েছে। পরিবারের লোকজন যোগাযোগ করলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষই থানায় এসে লিখিত অভিযোগ করেননি।”