সরিষাবাড়ীতে জমি বিক্রি করে পুনরায় বেদখলের অপচেষ্টায় বসতবাড়িতে হামলা-লুটপাট
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে জমি বিক্রি করে পুনরায় বেদখলের অপচেষ্টায় বসতবাড়িতে হামলা মারধর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষে অতন্ত ৬ জন আহত হয়ে সরিষাবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
গত শুক্রবার সকালে সরিষাবাড়ি উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের পোগলদিঘা (দক্ষিণপাড়া) এলাকায় ঘটনা ঘটে। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিষয়টি অভিযোগ করে সাংবাদিকদের জানান ভুক্তভোগীর পরিবার।
ভুক্তভোগীর পরিবার ও স্থানীয়দের সুত্রে জানা যায়, উপজেলার সীমান্তবর্তী কাজিপুর উপজেলার মনসুর নগর ইউনিয়নের গুয়াখাড়া গ্রামের মৃত শুক্কুর মাহমুদ এর ছেলে মো: আ: ছাত্তার ও ভাতিজা স্বপন মিয়ার নেতৃত্বে তার ভাই ও ভাতিজাসহ অজ্ঞাত ৩০-৪০ জন লোক, পোগলদিঘা ইউনিয়নের পোগলদিঘা গ্রামের অবসর পাপ্ত সেনাসদস্য আ: জলিল এর বসতবাড়ী বেদখলের অপচেষ্টায় চালায়। এসময় তার পরিবারের লোকদের মারধর করে নগদ অর্থ সহ স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়।
এসময় হামলাকারীদের বাধা দিলে গুরুতর আহত হন আনিছুর রহমান ও জুয়েল মিয়া। পরে তাদেরকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়ে দেয়। এছাড়াও আ: জলিল, জয়নাল আবেদীন, নজরুল ইসলাম, মমেনা ও সুলতানা বেগমসহ আরো অনেকেই আহত হন। পরে তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ী চলে যান।
এদিকে ভুক্তভোগী আ: রশিদ বলেন, ১৯৯৩ সালে আ: ছাত্তার ও মমিন দুই ভাই মিলে ওই সময়কার বাজার মূলে ১৫ শতাংশ জমি পনের হাজার টাকায় বিক্রি করে। কিন্তু তারা জমিটা লিখে দেয় না। পরে তারা আজকাল বলে ঘোরাতে থাকে। এরপর আবারো তারা টাকা দাবি করে এবং আমার কাছ আরো অতিরিক্ত টাকা নেয়। তবুও জমি লিখে দেয় না। পরে একদিন জমি লিখে দিবে বলে আমাদেরকে সাব রেজিস্টার অফিসে যেতে বলে। আমরা সাব রেজিস্টার অফিসে যাই। গিয়ে দেখতে পাই, তারা অন্য মৌজার দলিলাদি এনেছে। পরে আমরা সকলেই ফিরে আসি। এরপর একাধিকবার জমিটি লিখে দিতে বললেও তারা আর লিখে দেননি।
একপর্যায় আমরা নিরুপায় হয়ে আ: সাত্তারের ওয়ারিশ ফুফু মোছা: হালিমা বেগম ও চাচাতো ভাই মৃত নুরুল ইসলাম এর দুই ছেলে সুলতান মিয়া ও সুজন মিয়ার কাছ থেকে ৭৩ শতাংশর কাতে ১৫ শতাংশ জমি ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ইং তারিখে গ্রহীতা আব্দুল জলিল ও জুয়েল মিয়ার নামে নতুন করে ক্রয় করে দলিল সম্প্রদান করে নেই।
এ ব্যাপারে আব্দুর রশিদের ছেলে অবঃ সেনাসদস্য আব্দুল জলিল বলেন, দীর্ঘ ৩০ বছর যাবত এই জমিতে বসবাস করছি। আমার বাবা তাদেরকে কয়েকবার টাকা দিয়ে প্রতারিত হয়েছে। পরে আমরা অন্য ওয়ারিশদের সাথে কথা বলে এই জমি ক্রয় করে নেই। এটাই আমাদের অপরাধ। তারা বহিরাগত লোকজন এনে আমাদের বাড়িতে হামলা করে এবং আমার (এলপিআর) হতে প্রাপ্ত ১৫ লক্ষ টাকা ও ৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার আসবাবপত্র ভেঙ্গে আব্দুস সাত্তারের লোকজন লুট করে নিয়ে যায়। আমি এঘটনার তদন্ত সহ উপযুক্ত বিচার চাই।
এঘটনায় অপরদিকে বিবাদী আ: ছাত্তার ও আবুবকর আহত হওয়ার অজুহাতে হাসপাতালে ভর্তি হলেও বাদী পক্ষের থানায় করা অভিযোগ করার সংবাদ পেয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র না নিয়েই পালিয়ে যায়।
এছাড়া অভিযুক্তদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তারা সকলেই পুলিশের ভয়ে পলাতক রয়েছে। তাই কারো বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এ-বিষয়ে সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মুশফিকুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।